একই নদী বা একই পুকুরের জলের একই প্রজাতির মাছের মিলনে জন্ম নেওয়া রুই মাছ উন্নততর হয় না।
এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নরওয়ের গবেষণা সংস্থার কারিগরি সহায়তায় ভুবনেশ্বরের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ (আইসিএআর) ছ’টি ভিন্ন জলবায়ুতে বেড়ে ওঠা ৬ ধরনের রুই-এর মিলনে জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন এক ধরনেই রুই মাছের জন্ম দিয়েছে। যার নাম ‘জয়ন্তী রুই’।
জয়ন্তী রুই-এর বৃদ্ধির হার বেশি। ফলে মৎস্যচাষিরা অধিক লাভবান হচ্ছেন। রাজ্যের মধ্যে কেবল বহরমপুরের একটি হ্যাচারি জয়ন্তী রুই-এর ডিমপোনা চাষের অনুমতি পেয়েছে। সেই হ্যাচারির মালিক ঋত্ত্বিক আমির বলেন, ‘‘সাধারণ রুই-এর ১০০টি ডিমপোনার মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০টি বাঁচে। জয়ন্তী রুই-এর ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা ৬০-৬৫। আবার এই রুইয়ের বৃদ্ধির হারও অনেক বেশি।’’
‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানী যতীন্দ্রনাথ সাহা জানান, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, শতদ্রু ও ব্রহ্মপুত্র— পাঁচটি পৃথক নদীর পাঁচ রকমের রুই মাছ ও ‘আইসিএআর’- এর নিজস্ব উৎপাদিত এক প্রকার রুইয়ের মধ্যে পর পর ন’টি প্রজন্মের মিলন ঘটানো হয়েছে। এ ভাবে জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে জন্ম দেওয়া হয়েছে জয়ন্তী রুই-এর। নরওয়ের গবেষণা সংস্থার কারিগরি সহায়তায় ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানীরা ওই জয়ন্তী রুই-এর জন্ম দিয়েছে। সাধারণ রুই-এর থেকে জয়ন্তী রুই-এর পচনশীলতাও অনেকটা কম। এই প্রজাতির রুই দেখতেও বেশ ভাল। দেশি রুই-এর গায়ের রং কালচে লাল। অন্যদিকে জয়ন্তী রুই হালকা লালচে সাদা রঙের। চকচক করে। ভূবনেশ্বরে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’-এর অধীন রয়েছে ‘সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অব ফ্রেস ওয়াটার অ্যাকুয়াকালচার (সিআইএফএ)। মৎস্য দফতরের মুর্শিদাবাদ জেলা শাখার উপ-অধিকর্তা জয়ম্ত প্রধান বলেন, ‘‘সরকারি ‘আতমা’ প্রকল্প থেকে ঋত্ত্বিক আমিরকে প্রশিক্ষণের জন্য সিআইএফএ পাঠানো হয়েছিল। প্রশিক্ষণে সাফল্য পাওয়ার পর সিআইএফএ-র পক্ষ থেকে ঋত্ত্বিক আমিরকে এ রাজ্যে জয়ন্তী রুই মাছের ডিমপোনা উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’ অনুমতি পাওযার পর ২০১৩ সালে থেকে সিআইএফএ- এর নির্দেশিকা মেনে জয়ন্তী রুই-এর ডিমপোনা উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই বছর সেই সাফল্য এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy