Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

কামাই রুখতে পিকনিকের হাতছানি, বাড়ল হাজিরা

 অনুপস্থিতি রুখতে মাসচারেক আগে শিক্ষামূলক ভ্রমণ ও পিকনিকের আশ্বাস দিয়েছিল স্কুল। আর সেই আশ্বাস খুদেদের মনে দাগও কেটেছিল। তাতে ফলও মিলেছে। গত চারমাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কথাও রাখলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

দল বেঁধে অভয়ারণ্যে। নিজস্ব চিত্র

দল বেঁধে অভয়ারণ্যে। নিজস্ব চিত্র

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
Share: Save:

অনুপস্থিতি রুখতে মাসচারেক আগে শিক্ষামূলক ভ্রমণ ও পিকনিকের আশ্বাস দিয়েছিল স্কুল। আর সেই আশ্বাস খুদেদের মনে দাগও কেটেছিল। তাতে ফলও মিলেছে। গত চারমাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কথাও রাখলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

শুক্রবার পড়ুয়াদের বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে ঘুরিয়ে নিয়ে গেলেন অভয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। অরণ্য ঘুরিয়ে দেখানোর পাশাপাশি বিরিয়ানি ও মাংস খাওয়ানো হয় পড়ুয়াদের।

নদিয়ার তেহট্ট ২ ব্লকের ওই স্কুল অভয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১৭ জন পড়ুয়া আছে। তার মধ্যে এ দিন ৯০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে পিকনিক করতে এসেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। পিকনিক ও যাতায়াত বাবদ হাজার দশেক টাকা খরচ হয়েছে। পুরো খরচ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দিয়েছেন।

পড়ুয়ারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা দিয়েছে তারা নিয়মিত আসবে। প্রধান শিক্ষকের দাবি, পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় এখন স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না। তাই অবিভাবক এবং এসআইঅব স্কুলের অনুমতি নিয়ে তাঁদের এ দিন ভ্রমণ নিয়ে এসেছিলেন।

নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, ‘‘ছুটির দিন কিংবা স্কুল সময়ের পরেও পিকনিক করা যেতে পারে।”

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলাম বলছেন, “আগে স্কুলে পড়ুয়াদের গড় উপস্থিতির হার ছিল ৭৫-৮০ শতাংশ। গত মাস চারেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০-৯২ শতাংশ।” এ দিন পড়ুয়ারা তাঁদের কথা দিয়েছে অকারণে তাঁরা স্কুল কামাই করবে না।

অভয়নগর লাগোয়া আড়বেতাই এর মইদুল মণ্ডলের ছেলে নুর আখতার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। মইদুল বলছেন, “পিকনিক কথা বলতেই ছেলে স্কুল কামাই করত না।” তাঁর দাবি, এটা ভাল উদ্যোগ। এক দিকে শিক্ষামূলক ভ্রমণ হয়ে গেল, অন্য দিকে ওরা নিয়মিত স্কুলেও যাবে। আড়বেতাইয়ের নীহার মণ্ডলের ছেলে সোহান মণ্ডল তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। নীহার বলছেন, “শিক্ষকরা পিকনিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেই ছেলে স্কুল বন্ধ করেনি।”

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তারিকুল ইসলাম, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাহিন আলম জানিয়েছে, নিয়মিত স্কুলে এলে শিক্ষক- শিক্ষিকারা বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্য ঘুরে দেখাবেন বলে তাদের জানিয়েছিলেন। তাই তারা নিয়মিত স্কুলে যেত। স্কুল থেকে পিকনিক করার পাশাপাশি তাদের এ দিন অরণ্য ঘুরিয়ে দেখিয়েছে।

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা খাতুন বলে, ‘‘আগে টিভিতে হরিণ ময়ূর দেখেছি। এ দিন নিজের চোখে দেখলাম।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Attendance Students School Picnic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE