—প্রতীকী চিত্র।
খুন হয়ে যাওয়ার ভয়েই কি হত্যা করা হয়েছে কিশোরকে? মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় বছর ষোলোর পাপাই দাস খুনের ঘটনায় চার জন নাবালক সহপাঠীকে জেরা করে যা তথ্য হাতে এসেছে, তার ভিত্তিতে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
নাবালক খুনের ঘটনায় বুধবার চার জনকে আটক করেছিল ফরাক্কা থানার পুলিশ। তারাও সকলে কিশোর। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জেরা করে বহু তথ্য হাতে এসেছে। তাদের কথায় অনেক অসঙ্গতিও ধরা পড়েছে। তবে যা যা জানা গিয়েছে, তাতে চার জনের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেরায় চার জন দাবি করেছে, অনলাইন গেমের অ্যাকাউন্ট ও সেই অ্যাকাউন্টে থাকা কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় পাপাই তাদের খুনের হুমকি দিয়েছিল প্রথমে। অ্যাকাউন্ট আইডি ফেরত না দিলে ‘গেমিং কমিউনিটি’র বন্ধুদের জানিয়ে ‘দেখে নেবে’ বলেছিল। এ সব নিয়ে বচসা চলাকালীন ঘাবড়ে গিয়ে পাপাইকে ওই চার জন খুন করেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের ওই সূত্রের।
মঙ্গলবার ফরাক্কার গঙ্গার ঘাটের পাশে একটি ফিডার ক্যানেলের ধার থেকে বছর ষোলোর কিশোর পাপাই দাসের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমেই পাপাইয়ের মোবাইলটি খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পারেন, পাপাই দীর্ঘ দিন ধরে মোবাইল গেমে আসক্ত। মূলত একটি অনলাইন গেম খেলত সে। অ্যাকাউন্টটি অনেক পুরনো। আটক হওয়া চার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, পাপাইয়ের অ্যাকাউন্টের উপর অনেক দিন ধরেই তাদের নজর ছিল। অ্যাকাউন্ট টাকা খরচ করে বানানো হওয়ায় সেটি হাতানোর পরিকল্পনা করে তারা। সেই মতো অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে তাতে যা টাকা ছিল, তা-ও তুলে নেয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই বিবাদ চলছিল তাদের মধ্যে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, খুনের পরিকল্পনা করে নয়, গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মীমাংসা করার জন্যই ফিডার ক্যানেলের ধারে একটি নির্জন স্থানে ডাকা হয় পাপাইকে। সে সেখানে গেলে একসঙ্গে মদও খায় তারা। বিষয়টি মেটাতে গিয়ে আবার ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। সেই সময়েই খুনের হুমকি দেয় পাপাই। বলে, ‘’২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেখে নেব তোদের!’’ তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, এর পরেই পাপাইকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় চার জন। প্রথমে গাছের ডাল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। তার পর দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাকে। পরে ব্লেড চালিয়ে কাটা হয় গলার নলি। প্রমাণ লোপাট করতে পরে দেহ পুড়িয়েও দেওয়া হয়।
ধৃতেরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে বলেই দাবি করেছে পুলিশ সূত্র। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘চার নাবালকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করা হয়েছে তাদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy