মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সোমবার রামমন্দির উদ্বোধনের দিন কলকাতায় সংহতি মিছিল করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে মিছিল হাজরা থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে পার্ক সার্কাস ময়দানে। তৃণমূল সূত্রের খবর, মিছিল ছাড়াও সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিতে মিছিলের ফাঁকে ফাঁকেই আরও কিছু কর্মকাণ্ড করবেন মমতা।
মিছিল শুরুর আগে যে তিনি একা গিয়ে পুজো দেবেন কালীঘাট মন্দিরে, এ কথা মমতা দু’দিন আগেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুজো দিয়ে মিছিল শুরু করার পরে তাঁর আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রে সেই পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছে।
কালীঘাট মন্দির থেকে পুজো দিয়ে বেরিয়ে মমতা যাবেন মিছিলের জমায়েতে। বেলা সাড়ে ৩টের সময় হাজরা মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে তা এগোবে হাজরা রোড ধরে। প্রথমে মমতা ভেবেছিলেন রাসবিহারী অ্যাভিনিউ দিয়ে গিয়ে গড়িয়াহাট পৌঁছে বাঁ-দিকে বেঁকে সোজা পার্ক সার্কাসের পথে যাবেন। কিন্তু সেখানে নীচে রাস্তা এবং উপরের উড়ালপুলে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মমতা হাজরা রোড ধরে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি হয়ে সেখান থেকে বাঁ-দিকে মোড় নিয়ে মমতা পার্ক সার্কাসে পৌঁছবেন।
হাজরা রোড ধরে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে হাজরা ল’ কলেজের সামনে থামবে মিছিল। অদূরেই রয়েছে একটি মসজিদ। মিছিলের সম্মুখ ভাগ থেকে স্কুটারে চড়ে সেই মসজিদে গিয়ে চাদর চড়াবেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। সেখান থেকে আবার ফিরে আসবেন মিছিলের পুরোভাগে। তার পর মিছিল যাবে পার্ক সার্কাস ময়দানের উদ্দেশে।
পার্ক সার্কাস ময়দানের কাছাকাছি একটি গির্জাও রয়েছে। মিছিল থেকে সেখানেও যাবেন মমতা। গির্জায় সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা করে তিনি পৌঁছবেন পার্ক সার্কাস ময়দানে।
সংহতি মিছিলের মূল সভামঞ্চ হবে পার্ক সার্কাস ময়দানে। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই মঞ্চে থাকবেন না কোনও রাজনীতিক। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি, মুসলমান-সহ সমস্ত ধর্মের প্রতিনিধি থাকবেন মঞ্চে। সেখান থেকেই সংহতির বার্তা দেবেন মমতা। রামমন্দির উদ্বোধনে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিন আগেই মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, তিনি অযোধ্যা যাচ্ছেন না। এমনকি, রামমন্দির উদ্বোধনকে ‘ভোটের আগে গিমিক’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে রামমন্দিরের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’য় নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকারও সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছিলেন, ‘‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা আমাদের কাজ নয়। ওটা সাধুসন্তদের কাজ।’’ মোদীর রামমন্দির সংক্রান্ত কার্যকলাপ নিয়ে পুরী এবং উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্যেরাও সমালোচনা করেছেন। কারও নাম উল্লেখ না-করলেও মমতা বলেছিলেন, ‘‘যা সব হচ্ছে, তা নিয়ে সাধুসন্তরা কী বলছেন, সব আমরা দেখছি।’’
মমতা বারবারই বলেছেন, তিনি মনে করেন, ধর্ম যার-যার, উৎসব সবার। রামমন্দির উদ্বোধন বা রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগেও সে কথা তিনি বলছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতা মন্দির তৈরির বিরুদ্ধে নন। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যা হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতেই তাঁর সংহতি মিছিল। প্রসঙ্গত, রামমন্দির উদ্বোধনের দিন মমতার সংহতি মিছিল রুখতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট তাতে বাধা দেয়নি। তবে মিছিলে কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত তাঁর মিছিলে বাধা না দেওয়ায় ঘনিষ্ঠদের কাছে ‘সন্তোষ’ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy