গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রথম জনের সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। আবার মাত্র মাস দুয়েক আগে থেকে বাড়িতে যাতায়াত শুরু হয় দ্বিতীয় জনের। দু’জনের সঙ্গেই ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে’ জড়িয়েছিলেন নদিয়ার ভীমপুরে গৃহবধূর। ২৫ বছরের ওই বধূর খুনের তিন দিনের মাথায় রহস্যের কিনারা করল পুলিশ। যদিও গণধর্ষণের অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। তার মধ্যে এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জড়িয়েছিলেন ওই বধূ। মাস দুয়েক আগে স্থানীয় আর এক যুবকের সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব’ তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার এক প্রেমিককে বাড়িতে ডেকেছিলেন তিনি। অন্য দিকে, দ্বিতীয় প্রেমিক সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে পড়ে মুখোমুখি হন প্রেমিকা এবং তাঁর প্রথম প্রেমিকের। দুই যুবক মনে করেন তাঁরা প্রতারিত হচ্ছেন। তার পরেই বধূকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। ভীমপুরের ওই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন বিদ্যুৎ শিকদার এবং আশুতোষ বিশ্বাস। বিদ্যুৎ ওই যুবতীর প্রথম প্রেমিক বলে জানা যাচ্ছে। শনিবার অভিযুক্তদের কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর সমস্ত তথ্য মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।
বৃহস্পতিবার সকালে ভীমপুর থানার এলাকায় বাড়ি থেকে বধূর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে দেখে একটি ঘরে সিঁদ কাটা। বধূর মাথায় ভারী কোনও জিনিস আঘাতের চিহ্ন। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে উঠে আসে পরকীয়ার তত্ত্ব। জানা যায়, বধূর স্বামী কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। গত এপ্রিল মাসে তিনি শেষ বার বাড়ি এসেছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আশুতোষ মৃতার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত মৃতার শাশুড়িকে একটি কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথাবার্তার সুবাদে। অন্য দিকে, বিদ্যুতের বাড়ি সাথীর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে। তাঁর সঙ্গে আগে থেকেই ঘনিষ্ঠতা ছিল ওই বধূর। ঘটনাচক্রে প্রথম এবং দ্বিতীয় এবং অভিযুক্তের বাড়ি একই জায়গায়। খুনের তদন্তে নেমে ফোনের টাওয়ার লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার রাতে ৯টা নাগাদ বধূর বাড়িতে যান বিদ্যুৎ। প্রায় দেড় ঘণ্টা সেখানে ছিলেন বিদ্যুৎ। বধূর শাশুড়ি বাড়ি ছিলেন না। তিনি নাতিকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন।
বিদ্যুৎ সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা নাগাদ সাথীদেবীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার মধ্যে ওই বাড়িতে ঢোকেন আশুতোষ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সম্পর্কে জটিলতা নিয়ে তিন জনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। সেখান থেকেই এই খুন। সাথীর ফোন পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা জানাতে পারেন, ঘটনার রাতে বিদ্যুতের সঙ্গেই তিনি শেষ বার কথা বলেছিলেন। তবে বিদ্যুৎ না কি আশুতোষ, না কি দু’জনে মিলে বধূকে খুন করেছেন, এই বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় মিত কুমার মাকওয়ান বলেন, ‘‘গৃহবধূ খুনের ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্বিতীয় জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে সেগুলো এখনই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy