Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Murshidabad

Murshidabad murder: অনেক রাত পর্যন্ত ফোনে প্রেম করত দাদা, ভাবিনি খুন করতে পারে, লিখলেন সুশান্তের ভাই

আমার কোনও রকমের চাওয়াপাওয়া বা সমস্যা, সবটা দাদাকে বলতাম। দাদা অত্যন্ত স্নেহে সে সব পূরণ করত। সমাধানও।

সুশান্ত-সুতপা-শুভদীপ।

সুশান্ত-সুতপা-শুভদীপ। ফাইল চিত্র ।

শুভদীপ চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২২ ১৬:০৭
Share: Save:

দাদা যে খুন করতে পারে, এটা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। ও ভিতরে ভিতরে সত্যিই খুব নরম স্বভাবের ছিল। আমরা তিন ভাই। তিন জনের মধ্যেই খুব সদ্ভাব। তিন জনেই হাসি-মজা করে কাটাতাম। আমাদের জীবনে যে এমন আঁধার নেমে আসবে, তা ভাবিইনি কখনও।

বাবাকে ছোটবেলা থেকেই খুব কম পেয়েছি। পুলিশের চাকরি তো। বাইরে বাইরেই থাকে। আমরা তিন জন খুব বেঁধে বেঁধে থাকতাম। আমি রাতে দাদার সঙ্গে শুতাম। বুঝতে পারতাম রাতে কারও সঙ্গে ও কথা বলে। নিশুতি রাতে পাশে শুয়ে বুঝতে পারতাম, ফোনের ও পারে কোনও মেয়ে রয়েছে। কখনও জিজ্ঞাসা করিনি, কে? দাদাও কিছু বলত না। আমিও সঙ্কোচ বোধ করতাম। তবে ফোনের ও পারের ওই মেয়েটির সঙ্গে দাদা যে প্রেম করত, সেটা বেশ বুঝতে পারতাম। হাসি-মজা করেই কথা বলত ওরা। আমি সে সব শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম। তবে সেই মেয়ের নাম সুতপা কি না আমি জানি না।

আমার কোনও রকমের চাওয়াপাওয়া বা সমস্যা, সবটা দাদাকে বলতাম। দাদা অত্যন্ত স্নেহে সে সব পূরণ করত। সমাধানও। সেই দাদাকেই গত মাস কয়েক ধরে বদলে যেতে দেখলাম। বাড়িতে এলে কেমন খিটখিট করত। আমরা কিছু বললে তেড়ে যেত। মা কিছু বললে, হাঁসুয়া নিয়ে চোটপাট করত। আমরা খুব ভয় পেতাম। চেনা দাদা কেমন যেন বদলে যেতে থাকল। ভয়ে কথা বলতে পারতাম না। কিছু জিজ্ঞাসাও করতে পারতাম না। সিঁটিয়ে থাকতাম। অথচ এই দাদাই পিসির বাড়ি থেকে যখন ফিরত, আমার জন্য কত কিছু আনত। মালদহে পিসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত ও। সপ্তাহে সপ্তাহে বাড়ি আসত। তখন খোলা মাঠে আমরা তিন ভাই ছুটে বেড়াতাম। গ্রামের অলিগলিতে একসঙ্গে ঘুরতাম। পুজোর সময় দাদার সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যেতাম। কত মজা হত।

কিন্তু হঠাৎই বদলে যেতে থাকে দাদা। বাড়িতে আসতে চাইত না। এলেও হাসিখুশি ভাবটা একেবারেই ছিল না। চুপচাপ। খুব কম কথা বলত। দাদাকে কখনও নেশা করতে দেখিনি। মাঝে কয়েক বার সেটাও দেখলাম। কেন এমনটা হল? কোনও ভয়ঙ্কর বিপদের আঁচ করতে পারছিল কি ও? আর সেখান থেকেই কি এমন একটা কাণ্ড করে ফেলল! গত সোমবারের পর থেকে আমাদের পরিবারের মাথা একেবারে নিচু হয়ে গিয়েছে। সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। ও যে কী করল! কেনই বা করল! জানি না। বুঝতেও পারছি না।

(লেখক সুতপা খুনে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর ভাই)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy