ফাইল চিত্র।
কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে হত্যার পনেরো দিন আগে থেকে সুশান্ত চৌধুরী বহরমপুরে একটি মেসে থাকত। শুক্রবার ভোরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয়। তার পরে সুশান্ত সব কথা খুলে বলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত সুশান্ত গোরাবাজার এলাকার রুটিমহল রোডের একটি মেসে ছিল। মেসের মালিক কৌশিক সাহা বলেন, “মালদহের এক শিক্ষক গোরাবাজারে পড়াচ্ছেন বলে দাবি করে সুশান্ত। সে বলে, তাঁর কাছে পড়তেই সে বহরমপুরে থাকতে চায়। তাই মাস তিনেকের জন্য ঘর ভাড়া লাগবে। তিন মাসের জন্য থাকতে দেওয়া হয় না বলায় বলেছিল মাস শেষ হলে নতুন ভাড়া দেখে চলে যাবে। তখন রাজি হই।”
ছ’শো টাকা ভাড়াও আগাম দিয়েছিল। সঙ্গে শুধু একটি ব্যাগ ছিল। কৌশিকবাবু বলেন, “চৌকিতে চাদর বিছিয়ে শুয়ে থাকত। ঘরের জানলা বন্ধ থাকত। মোবাইল নিয়ে নাড়াঘাটা করত।” চৌকির উপরে এখনও পড়ে রয়েছে আধখাওয়া বিড়ির টুকরো।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা নাগাদ সে মেসের মালিককে ‘আসছি’ বলে বেরিয়ে সুইমিং পুলের গলির উল্টো দিকে বকুলতলার একটি বন্ধ চায়ের দোকানের ধাপিতে বসে সুতপার জন্য অপেক্ষা করছিল। মোহন মলের দিক থেকে এসে সুতপা যখন মেসে ঢুকতে যাবে তখন তাকে ডাকে সুশান্ত। সুতপা মেসে ঢোকার আগেই তার উপরে চড়াও হয় সে।
খুনের পরে সুশান্ত মেসবাড়ির পাশের পাঁচিল টপকে চৌধুরী ভিলার পাশের রাস্তা দিয়ে উঠে টোটোয় ফের নিজের মেসে ফেরে। সেখানে পোশাক পরিবর্তন করে ‘ঘর পেয়েছি’ বলে জানিয়ে এলাকা ছাড়ে অন্য একটি টোটোয়। ইতিমধ্যে সুতপাকে পাঠানো ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োতে সুশান্তকে কাঁদতে দেখা যায়। বলতে শোনা যায়, “পাঁচ মাস কথা বলিসনি। এর থেকে বিষ খাইয়ে দিতে পারতিস। কান্না দেখে তোর অভিনয় মনে হলেও জানবি মধ্যবিত্ত ছেলেরা কান্নার অভিনয় করতে পারে না।” আনন্দবাজার সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে কী করে সেই ভিডিয়ো সুতপার কাছে পৌঁছল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা, দু’জনেরই পরিচিত কোনও এক জন এই ঘটনায় জড়িত। তার খোঁজ চলছে।
প্রথম দিকে বেপরোয়া থাকলেও পুলিশের লক-আপে দিন তিনেকেই ঝিমিয়ে পড়েছে সুশান্ত। এ দিন ভাত ও আলুর তরকারি নিয়ে মাথা নিচু করে ভাতের মধ্যে দীর্ঘ ক্ষণ আঙ্গুল চালাতে দেখা যায় তাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy