হাহাকার: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের বাড়ির লোকজন। নিজস্ব চিত্র
ফাঁকা রাস্তা দেখে মোটরবাইকের গতিটা বাড়িয়ে দিয়েছিল চালক। কিন্তু সেটাই যে কাল হবে ভাবতে পারেননি কেউ। সামনের লরিটা ভাল গতিতে এগোচ্ছিল। আচমকা সেটির থমকে যায়। তা দেখে ঘাবড়ে যায় চালক। তখন মোটরবাইকের গতি যা হঠাৎ করে ব্রেক কষলে মোটরবাইকটি উল্টে যেতে পারত। ততক্ষণে মোটরবাইক এগিয়ে গিয়ে সজোরে লরির পিছনে ধাক্কা মারে। তিনজনেই ছিটকে পড়ে মোটরবাইক থেকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এমনই বয়ান উঠে আসছে টহলদারি পুলিশের থেকে। সুতি থানার ধলোর কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এই মোটরবাইক দুর্ঘটনায় তিনজন মারা যান। মৃতেরা হলেন সুতির কুমোরপাড়ার আলাউদ্দিন খান (২২), তাঁর শ্যালক সাহাবাদ পাড়ার সিটন শেখ (২২) ও পিসতুতো ভাই ছাবঘাটির কার্তাব শেখ (২৩)। সমবয়সী তিন জনে মিলে এ দিন নিমতিতা থেকে মোটরবাইক চালিয়ে ফিরছিলেন। হেলমেট ছিল কারও মাথাতেই।
পুলিশ বলছে, রাতে ফাঁকা রাস্তায় মোটরবাইকের গতি ছিল বেশি। একটি লরির পিছনে ছিল মোটরবাইকটি। হঠাৎ লরিটি গতি কমাতেই বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি ধাক্কা মারে লরির পিছনে। ঢুকে যায় লরির তলায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আলাউদ্দিনের। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে আনার পথে মারা যান অন্য দু’জন।
দুর্ঘটনার সময় আশপাশেই ছিল পুলিশের টহলদারি ভ্যান। পুলিশই তাদের লরির তলা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মৃত তিনজনেই পেশায় রাজমিস্ত্রি। ১৪ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল মৃত কার্তাবের। তার তার চার দিন পরেই বিয়ে হয় আলাউদ্দিনের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মৃতদের আত্মীয়রা ছুটে যান হাসপাতালে।
আলাউদ্দিনের শ্যালক রাজেশ জানান, বোনের বিয়েতে উপহার হিসেবে মোটরবাইকটা কিনে দেন। সেই মোটরবাইক যে এমন মৃত্যু ডেকে আনবে ভাবিনি। কার্তাবের কাকা খারিদ শেখ বলেন, “বিয়ের রেশ এখনও কাটেনি বাড়িতে। ক’দিন পরেই তারা বেড়াতে যাবে ঠিক ছিল। এরই মধ্যে সব ওলটপালট হয়ে দিল।’’ শুধু মেয়েদের পরিবারে নয়, ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গোটা ছাবঘাটিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy