Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

শৌচাগারে শ্লীলতাহানির চেষ্টা কান্দি হাসপাতালে

অন্তর্বিভাগে রোগীর থেকে তাঁর বাড়ির লোকজনের সংখ্যা বেশি। রোগীর শয্যায় বসেই খোস গল্প জুড়ে দেন তাঁদের বাড়ির লোকজন। বারান্দায় ইতিউতি ঘুরে বেড়ায় গবাদি পশুর দল। কান্দি হাসপাতালে গেলেই এমনই ছবি হামেশাই চোখে পড়বে।

নিজস্ব সংবাদদাদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৫
Share: Save:

অন্তর্বিভাগে রোগীর থেকে তাঁর বাড়ির লোকজনের সংখ্যা বেশি। রোগীর শয্যায় বসেই খোস গল্প জুড়ে দেন তাঁদের বাড়ির লোকজন। বারান্দায় ইতিউতি ঘুরে বেড়ায় গবাদি পশুর দল। কান্দি হাসপাতালে গেলেই এমনই ছবি হামেশাই চোখে পড়বে। নিরাপত্তার কোনও বালাই নেই। এ নিরাপত্তার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে হাসাপাতালে অন্দর মহলে ঢুকে পড়ল এক দুর্বৃত্ত। অভিযোগ, শনিবার বছর বাইশের এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করে ওই নাম-পরিচয়হীন দুর্বৃত্ত। ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তরুণীর দুল। এই ঘটনায় রোগীর বাড়ির লোকজন হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ক্ষোভ উগড়ে দেন।

দিনকয়েক ধরে দোতলার শিশু বিভাগে শহরেরই বাসিন্দা এক তরুণী তাঁর দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে ভর্তি হন। শনিবার বিকেলে ওই মহিলা শৌচাগারে যান। সেখানে ঘোরাঘুরি করছিল এক যুবক। আচমকা তরুণীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। মহিলা কোনও ক্রমে যুবককে ধাক্কা মেরে শৌচাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। ততক্ষণে হাসপাতালের লোকজন হাজির হয়ে যান ওই বিভাগে। বিপদ বুঝে দ্রুত হাসপাতাল চত্বর ছাড়ে ওই যুবক। যদিও ঘটনায় পর ওই মহিলার পরিবারের পক্ষে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। মহিলার স্বামী বলেন, “স্ত্রীর কানের দুল হাতানো ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল ওই যুবক।’’

ঘটনার পর রোগীর বাড়ির লোকজন সুপারকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। ওই যুবককের খুঁজে বার করার আর্জি জানান। বীরভূমের কলেশ্বরের বাসিন্দা দিবাকর মণ্ডল বলেন, “হাসপাতালে নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় যে যখন পারে ভিতরে চলে আসে। কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কিছুই ভাবে না। এ দিন তো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল।’’

ঘটনার কথা স্বীকার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মান্ডি বলেন, “গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পাঁচটি অন্তর্বিভাগে নিরাপত্তা রক্ষী নেই। আসলে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে।’’

বস্তুত জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ হাসপাতালেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী নেই। কান্দিতে ২৭ জন নিরাপত্তা রক্ষী থাকার কথা। সেখানে রয়েছেন মাত্র ন’জন। তাদের মধ্যে একজন জরুরি বিভাগের সামনে থাকেন। দু’জন প্রসুতি বিভাগে কর্মরত। ওই দুই জায়গায় আট ঘণ্টা করে ন’জন ডিউটি করেন।

জঙ্গিপুর, ডোমকল, লালবাগ, সাগরদিঘি হাসপাতালেও নিরাপত্তা রক্ষীর অভাব রয়েছে বলেও স্বীকার করে নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, “হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়ে গত শুক্রবার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েছি। হাসপাতালের বাইরে পুলিশ ক্যাম্প করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু ভিতরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হবে।” নিরুপমবাবু জানান, তবে সাগরদিঘি ও ডোমকল হাসপাতালে ১৬ জন করে নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়া হবে। কিন্তুগুলি এখনই কোনও নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা সম্ভব হবে না।

অতএব, কান্দি হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে বাইরের লোকজনের উৎপাত এখনই থামবে না। এমনটাই আশঙ্কা এলাকার লোকজনের।

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy