নিজামুদ্দিন বিশ্বাস
এনআরসি-আতঙ্ক ছিলই। নয়া নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে আরও আতঙ্ক বেড়েছে। তার জেরে গত কয়েক দিনে মুর্শিদাবাদে কিছু এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কোথাও বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা চলেছে সমানে। মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তি চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের বলছি, আপনারা নমাজের পর মাইকে শান্তির কথা বলুন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা প্রচার করুন। ঐক্যবদ্ধভাবে, জোটবদ্ধভাবে প্রশাসনকে সঙ্গে রেখে তাঁদের অনুমতি নিয়ে আন্দোলন করার কথা বলুন।
জেলা জুড়ে প্রায় ৬২০০ মসজিদের ইমাম আছেন, আপনাদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে প্রচার করুন। আন্দোলনের জেরে যেন সাধারণ মানুষের কষ্ট না হয়, সরকারি সম্পত্তি যেন নষ্ট না হয়, তা বোঝাতে হবে। আন্দোলন করা যেমন মানুষের অধিকার রয়েছে, তেমনই সরকারি সম্পত্তি বা সাধারণ মানুষের সম্পত্তি নষ্ট করার অধিকারও কারও নেই। মানুষকে অসুবিধা ফেলার অধিকার আমাদের কে দিল!
ইসলাম শান্তির কথা বলে। ইসলাম অশান্তিকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরা সে কথাই বলছি। কোনও প্ররোচনায় পা দিয়ে অশান্তির পথে হাঁটবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ নিশ্চয় করবেন, কিন্তু তার ধরন যেন ধ্বংসাত্মক না হয়। ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করলে জনগণের ক্ষতি হবে। তাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন কর্মসূচি করুন। আন্দোলন করতে গেলে প্রশাসনের কাছ থেকে যে ভাবে অনুমতি নিয়ে করতে হয় সেটা করুন।
এনআরসি, সিএবি বা নয়া নাগরিকত্ব আইন যে ভাবে ভারতের সংবিধানের মূল কাঠোমাকে আঘাত করেছে, যে ভাবে ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করছে, যে ভাবে সংবিধানকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে, তা দেশের মানুষ মেনে নেবেন না। ওই আইনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন, তা সকল সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে করতে হবে।
আন্দোলন মানে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া নয়, আন্দোলন মানে অন্যকে আক্রমণ করা নয়। আমার মনে হয়, নয়া নাগরিকত্ব আইন ভারতীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংসের বড় অস্ত্র। এই আইনে ৬ টা ধর্মের নাগরিকত্বের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাতে মুসলিমদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা বড় ধরনের ক্ষতির দিক। সাম্প্রদায়িক বিভাজন করা এই আইনকে প্রত্যাহার করতে হবে। এ আমাদের সকলেরই দাবি। এই দাবিতে আন্দোলনও করতে হবে। কিন্তু, এ কথাও ঠিক, তা যেন কোনও ভাবেই ধ্বংসাত্মক না হয়। সিএবি এবং এনআরসির বিরুদ্ধে সেই আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে।
জেলা ইমাম ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের জেলা প্রতিনিধি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy