নিখোঁজ সন্ধ্যা পাল। —নিজস্ব চিত্র
এক মধ্যবয়স্ক মহিলার নিখোঁজ হওয়াকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল মায়াপুরে। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার দুপুরের পর হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান মায়াপুর-বামুনপুকুর ১ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সন্ধ্যা পাল। পরিচিত জন এবং বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজির পরেও বছর পঞ্চাশের সন্ধ্যার সন্ধান না মেলায় পরদিন বুধবার নবদ্বীপ থানায় সন্ধ্যার ছেলে দেবাশিস পাল একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
সন্ধ্যার ছেলে দেবাশিস জানান, বুধবার বিকেল নাগাদ তাঁর মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। যিনি ফোন করেছিলেন তিনি জানান, তাঁর মায়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এখুনি হাওড়া স্টেশনে যেতে। বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। এর পর যত বার ফোন করেছেন, তত বার বিভিন্ন জায়গার কথা বলে বিভ্রান্ত করতে থাকে। হাওড়ার পরেই বলা হয়, তাঁর মা কালনায় আছেন, তার পরই বলা হয় পোড়ামাতলায় আছে। তাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন এবং নবদ্বীপ থানায় গিয়ে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যে ফের ওই নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয় তাঁর মা নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে আছেন। পরিবারের লোকজন জানান, তা শুনে আর দেরি করেননি। কিছু ক্ষণের মধ্যে নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে পৌঁছে যান সন্ধ্যার বাড়ির লোকজন। সেখানে গিয়ে ওই মোবাইল নম্বরে ফোন করে দেখা যায় নম্বরটি চম্পা নামে এক বৃহন্নলার। নিখোঁজ ওই মহিলার পরিজনদের অভিযোগ চম্পা প্রথমে তাঁদের জানান, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সন্ধ্যা নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ একা বসে ছিলেন। বিষয়টি নজর করে ববিতা দেবনাথ বলে এক জন মহিলা তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান। নবদ্বীপ স্টেশন সংলগ্ন পূর্ব বর্ধমানের শ্রীরামপুরের কুণ্ডুপাড়ায় ববিতার বাড়ি। চম্পাও ওই একই এলাকার বাসিন্দা। তিনি দাবি করেন, ববিতাই তাঁর মোবাইল থেকে ফোন করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন। এর পর চম্পাকে সঙ্গে নিয়ে কুণ্ডু পাড়ায় পৌঁছন সন্ধ্যার বাড়ির লোকেরা। কিন্তু ববিতা জানান, বুধবার দুপুরের পর সন্ধ্যা তাঁর বাড়ি থেকে কিছু না বলেই চলে গিয়েছেন। তাঁদের কথায় সন্দেহ হওয়ায় সন্ধ্যার বাড়ির লোকেরা বুধবার রাতেই নাদনঘাট থানায় বিষয়টি জানান। সেখানকার পুলিশ চম্পা এবং ববিতাকে ডেকে পাঠায় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদের পর তদন্তের স্বার্থে তাঁদের নবদ্বীপ থানার হাতে তুলে দেয়। নবদ্বীপ থানার পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
নিখোঁজ মহিলার স্বামী মানিক পাল জানান, “কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে আমার স্ত্রীকে আটকে রাখা হয়েছে। আমি চাই পুলিশ ওকে দ্রুত উদ্ধার করুক।” অন্য দিকে, ছেলে দেবাশিস বলেন, “কী ভাবে যে ওদের খপ্পরে পড়লেন তা বুঝতে পারছি না। আমার বিশ্বাস ওঁরা খারাপ উদ্দেশ্যে নিয়ে মাকে কোথায়
সরিয়ে রেখেছে।” যদিও ববিতা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সন্ধ্যাকে আগে থেকেই চিনি বলেই বাড়িতে একরাত আশ্রয় দিয়েছিলাম। কিন্তু এমন বিপদে পড়তে হবে জানলে কে থাকতে দিত।” পুলিশ জানিয়েছে দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy