—ফাইল চিত্র
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন চালুর পরে আগের বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবার ও উপভোক্তাদের সেই আইনের আওতায় আনা হয়েছিল। সেই মতো, ২০১৬ সালের গোড়ার দিকে তাঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হয়। এর পরেও দেখা যায় বহু মানুষ আইনের অধীনে এসেও কার্ড পেলেন না।
এর পরেই রাজ্য সরকার নতুন প্রকল্প তৈরি করে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা চালু করে। কিন্তু রাজ্যের যোজনাতেও কার্ড পেতে গেলে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। কিন্তু খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ঝাঁকে-ঝাঁকে লোকজন কার্ড চেয়ে আবেদন করতে শুরু করেন। ফলে তিনি আদৌ ঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করেছিলেন কি না, তা দেখার সময় ছিল না। মূলত রেশন ডিলারের কাছ থেকে বা ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম নিয়ে লোকজন কার্ডের জন্য আবেদন করতে শুরু করেন। সেই আবেদনপত্র খাদ্য দফতরের পরিদর্শকের অফিস ঘুরে কলকাতার খাদ্য ভবনে ডিজিটাল কার্ড তৈরি হয়। পরে তা জেলা খাদ্য নিয়ামকের অফিসে আসে। সেখান থেকেই বিলি হয় কার্ড।
খাদ্য দফতরের এক পরিদর্শকের দাবি, আবেদনকারী কেন আবেদন করলেন তা যাচাই করে দেখার কথা। কিন্তু প্রতি দিনই শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। সরকারও চায়, দ্রুত কার্ড দিতে হবে। ফলে সময়ের অভাবেই আবেদনকারী ঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করেছেন কি না তা যাচাই করা যায় না। কার্যত আবেদন করলেই কার্ড মেলে। আর এই নজরদারির অভাবের জন্য হাজার-হাজার মানুষ কার্ড পেয়ে গিয়েছেন। যদি ঠিক ভাবে কার্ড দেওয়া হত, তা হলে গ্রাম-শহর নির্বিশেষে বহু জন কার্ড পেতেন না।
গ্রামীণ এলাকায় কার্ড পাওয়ার নিয়ম হল— কারও দু’চাকা বা তিন চাকার গাড়ি বা মাছ ধরার নৌকা থাকলে তিনি রেশন কার্ড পাবেন না। ট্রাক্টর, কিসান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি ঋণ নিলে, বাড়ির কেউ সরকারি কর্মী হলে, কেউ অকৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত কোনও সরকারি নিবন্ধীকৃত কাজ করলে, বাড়ির কেউ ১০ হাজার টাকার বেশি আয় করলে, আয়কর বা পেশাগত কর দিলে, তিন কামরার ছাদওয়ালা পাকা বাড়ি থাকলে, রেফ্রিজারেটর, ল্যান্ডলাইন ফোন, ২.৫ একর সেচসেবিত জমি ও সঙ্গে সেচ দেওয়ার যন্ত্র থাকলে বা দুই ফসলি পাঁচ একর জমি থাকলেও কার্ড পাবেন না। এর যে কোনও এক শর্তই তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
শহরের ক্ষেত্রেও প্রায় ওই ধরনের পাঁচটি শর্ত রয়েছে। খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা শুধু দেখেন কার্ড পাওয়ার কোনও শর্তে আবেদনকারী ‘টিক’ দিয়েছেন। তার পরেই কার্ড দেওয়া হয়। সরেজমিন তদন্ত করার সময় থাকে না। তাঁদের দাবি, এর কারণ লোকবলের অভাব।
কর্তাদের মতে, কার্ড দেওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য নিলে অনেকটাই সুবিধা হত, সন্দেহ নেই। কেননা তাঁরা এলাকার মানুষকে ভাল চেনেন। কিন্তু ভোটের রাজনীতির চক্করে তাঁরা কারও নাম বাদ দেওয়ার কাজে নিজেদের জড়াতে চান না। উল্টে কার্ড দেওয়ার জন্যই দফতরকে চাপ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy