শান্তিপুর: ভুয়ো ভোটার নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে চাপান-উতোরের মধ্যেই রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপে প্রচুর ভোটার কার্ড পাওয়া গেল নদিয়ার শান্তিপুরে। কার্ডগুলিতে মূলত উত্তর ২৪ পরগনার
ঠিকানা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষ্ণকালীতলায় গুপ্তিপাড়া ঘাটের রাস্তার ধারে প্রচুর ভোটার কার্ড পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ গিয়ে সেগুলি উদ্ধার করে। ভোটার
কার্ড ছাড়াও, সেখানে কার্ড হারানোর কথা জানিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদনপত্র-সহ বেশ কিছু নথিও ছিল। শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, “ভোটার কার্ডগুলি আমরা খতিয়ে দেখছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট
পাঠানো হয়েছে।”
বেশ কিছু দিন ধরেই ভোটার তালিকা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির তরজা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ভোটার তালিকায় কারচুপি হচ্ছে। একেবারে বুথ স্তর থেকে তালিকায় নজর দেওয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। পাল্টা, তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্যের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ করেন রাজ্য
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। দু’পক্ষই রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। একই ‘এপিক’ নম্বরে বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক ভোটার কার্ডের অস্তিত্ব মেনে নেয় কমিশন।
সে আবহে এ দিন শান্তিপুরে রাস্তার ধারে ভোটার কার্ড মেলায় তরজা নতুন করে উসকে উঠেছে। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক
জেলা সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন কড়াকড়ি শুরু করায় ধরা পড়ার ভয়ে তারা ভুয়ো ভোটার কার্ড নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন ঘটনা আরও সামনে আসবে।’’ শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর পাল্টা দাবি, ‘‘ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আমরাই প্রথম সরব হয়েছি। আমাদের তরফে তালিকা পর্যালোচনার কাজও চলছে। মানুষ জানেন, আসলে কারচুপিটা কারা করেছে। এগুলো বিজেপির কাজ।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)