Advertisement
০২ অক্টোবর ২০২৪

তালাবন্দি আবাসন, রাস্তাতেই ভবঘুরেরা

ভবঘুরেদের জন্য তৈরি সেই আবাসন। — নিজস্ব চিত্র

ভবঘুরেদের জন্য তৈরি সেই আবাসন। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
Share: Save:

শহরের মধ্যেই তৈরি হয়েছে পেল্লাই সাইজের ভবন। কেন্দ্রীয় অর্থানুকুল্যে। মাস ছ’য়েক ধরে সেই ভবনের মূল ফটক তালাবন্ধ। ওই ভবন তৈরি করা হয়েছিল ভবঘুরেদের জন্য। ঠিক ছিল, বিনা পয়সায় সেখানে দু’বেলা খাবার পাবেন ভবঘুরেরা। রাতেও ঠাঁই হবে সেই ভবন।

কিন্তু শীতের মুখেও সেই ভবন চালু হওয়ায় শহরের মানুষ অসন্তুষ্ট। অনেকেই বলছেন, ‘‘এ বার
কনকনে শীতেও ঘরহীন মানুষগুলিকে হয়ত ছাদবিহীন বাসস্ট্যান্ড চত্বরেই রাত কাটাতে হবে। ওঁদের কথা কেউ ভাবে না।’’

সারাদিন উদ্দেশ্যহীন ভাবে নদিয়ার সদর শহর, কৃষ্ণনগরে শ’খানেক মানুষ ঘোরাফেরা করেন। ওঁদের নির্দিষ্ট কোনও ঠিকানা নেই। ফুটপাতেই সংসার। পথচলতি লোকজনের কাছে হাত পাতলে খাবার জোটে। অনেক সময় তা জোটেও না। আর রাত হলেই বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে রেল স্টেশন, শহরের মোড়ের মাথায় যাত্রী সেড কিংবা কখনও কখনও খোলা আকাশের নিচে গাছের তলায় তাঁরা রাত কাটান। বর্ষায় সময় বৃষ্টিতেই ভিজতে হয় তাঁদের। এমন গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় বছর দেড়েক আগে একটি ‘ভবঘুরে আবাস’ তৈরির কাজ শুরু করেছিল কৃষ্ণনগর পুরসভা। মাস ছয়েক আগে সেই কাজ শেষ হয়। কিন্তু আজও তা চালু হয়নি।

কী বলছে পুরসভা? তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান অসীমকুমার সাহা বলেন, “আমরা আগেই ‘ভবঘুরে আবাস’ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্গাপুজোর মধ্যে ‘ভবঘুরে আবাসের’ পাশে পুরসভার একটি নির্মীয়মান গ্যারেজ ভেঙে পড়ে। যার ফলে আমরা ‘ভবঘুরে আবাস’ চালুর বিষয়টি তখন স্থগিত রেখেছিলাম। তবে আমরা শীঘ্রই ‘ভবঘুরে আবাস’ চালু করব।”

কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বিভিন্ন শহরের ভবঘুরেদের থাকার জন্য ‘ভবঘুরে আবাস’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। কৃষ্ণনগরেও ভবঘুরেদের জন্য আবাসন তৈরির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। পুরসভার পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা হয়। তাতে দেখা যায়, পুর এলাকায় প্রায় ২২০ জন ভবঘুরে রয়েছেন। যারা সারাদিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। রাত হলেই তাঁরা স্টেশন থেকে শুরু করে বাসস্ট্যান্ড, বাসযাত্রী প্রতীক্ষালয়, কিংবা শহরের মোড়ের মাথায় রাত কাটান। তাঁদের জন্য ১কোটি টাকায় পুরসভা জেলখানা রোডের ধারে (জলকলে) ভবন তৈরি করে। আবাসনে ভবঘুরেদের নিখরচায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। রাতে একশো জন ভবঘুরে থাকতে পারবেন।

কিন্তু কবে থেকে? সে উত্তর কেউ দিতে পারছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE