Advertisement
০২ অক্টোবর ২০২৪
Durga Puja 2024

সবচেয়ে ‘বড়’ দুর্গার পুজো হচ্ছেই না! ‘রেকর্ড’ ভাঙতে ১১২ ফুটের প্রতিমা হলেও পুলিশের ‘না’ মানল কমিটি

ক্লাব কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘মামলা-মোকদ্দমায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এই মুহূর্তে মামলা লড়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই। তাই জেলাশাসকের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। হাই কোর্টে মামলা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চলছে।’’

Nadia District Magistrate refused to give nod in 112 feet Durga idol in Ranaghat

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫৬
Share: Save:

রানাঘাটে ‘বাংলার সবথেকে বড় দুর্গা’র অনুমতি ফের বাতিল করল প্রশাসন। মঙ্গলবার নদিয়ার জেলাশাসক জানান, ওই পুজোর অনুমতি দিলে ভিড়ের জেরে প্রাণহানির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সব দিক বিবেচনা করে পুলিশ-প্রশাসন ওই পুজোর অনুমতি দিচ্ছে না। তার জেরে কলকাতা হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকলেও জেলাশাসকের ওই সিদ্ধান্তের পরে পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘গ্রামবাসীদের টাকায় এই পুজো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মামলা মোকদ্দমায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এই মুহূর্তে মামলা লড়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই। তাই জেলাশাসকের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। হাই কোর্টে মামলা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চলছে।’’

১১২ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরির ঘোষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল রানাঘাটের কামালপুর অভিযান সঙ্ঘ। তাদের দাবি ছিল, এটিই হবে ‘বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্গা’। কিন্তু পুলিশ ওই পুজোয় অনুমতি দেয়নি। কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন উদ্যোক্তারা। আদালতে প্রশাসন জানায়, দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা মাথায় রেখে ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিশালাকার ওই প্রতিমা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করবেন। এর ফলে পদপিষ্টের মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানান, মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকে কি দর্শন সম্ভব? এই বিষয়টি বিবেচনা করে জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাই কোর্টের ওই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার রিপোর্ট দেন নদিয়ার জেলাশাসক।

রিপোর্টে তিনি জানান, ১২ ফুট চওড়া রাস্তার উপর মণ্ডপ করা হয়েছে। আশেপাশের গ্রামের মধ্যে সেটিই একমাত্র রাস্তা। জরুরি প্রয়োজন, অ্যাম্বুল্যান্স সেই রাস্তা দিয়েই যায়। ওই রাস্তার উপর গ্রামের ৮,৬০০ মানুষ নির্ভরশীল। ফলে অনুমতি দিলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া বিপুল ভিড় হলে তা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। জেলাশাসক আরও জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক রাখা হলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কোনও অঘটন ঘটলে অ্যাম্বুল্যান্সকে ওই রাস্তা দিয়েই পার করাতে হবে। ভিড়ের মধ্যে তা সম্ভব নয়। মানুষের জীবনহানির আশঙ্কা থেকেই পুলিশ-প্রশাসন ওই পুজোর অনুমতি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।

হাই কোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিমের সওয়াল ছিল, ‘‘মণ্ডপের চারিদিকে খোলা মাঠ রয়েছে। দেশপ্রিয় পার্কের মতো বদ্ধ পরিবেশ নয়। এই পুজো গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলতে পারে। ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা এই পুজো দেখতে আসবেন বলে যোগাযোগ করেছেন।’’ পুজো কমিটির সদস্য সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা মিলে নতুন কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম। তাঁরাই এই পুজোর টাকা দিয়েছেন। এখন প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হাই কোর্ট থেকে মামলাও তুলে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE