Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কাল ধর্মঘট সফল করতে মরিয়া বাম

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বুধবারের ধর্মঘট সফল করতে মরিয়া বামপন্থী ছাত্র, যুব ও শ্রমিক সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যেই বামেরা স্লোগান দিয়েছে, এই ধর্মঘট হবে ‘চোখে চোখ রেখে’।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটের সমর্থনে কৃষ্ণনগর স্টেশনে প্রচার ডিওয়াইএফ-এর। সোমবার।  নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটের সমর্থনে কৃষ্ণনগর স্টেশনে প্রচার ডিওয়াইএফ-এর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫৮
Share: Save:

এক দিকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ আর বিক্ষোভকারীদের উপরে পুলিশের লাঠি-গুলি। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে জেএনইউ-এর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কখনও পুলিশ, কখনও মুখ ঢাকা এবিভিপি কর্মীদের হামলা। আর সেই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান আর্থিক মন্দা আর বাড়তে থাকা বেকারত্ব।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বুধবারের ধর্মঘট সফল করতে মরিয়া বামপন্থী ছাত্র, যুব ও শ্রমিক সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যেই বামেরা স্লোগান দিয়েছে, এই ধর্মঘট হবে ‘চোখে চোখ রেখে’। এর মধ্যে রবিবার রাতে জেএনইউ-এ বহিরাগত গুন্ডাদের আক্রমণ গোটা দেশ জুড়ে যে অভিঘাত তৈরি করেছে, তাতে এই ধর্মঘটের প্রাসঙ্গিকতা এবং সফল হওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে, ধর্মঘটে বাধা এলে যে পরিস্থিতি ঘোরালো হতে পারে, সেই আশঙ্কা থাকছেই।

রাজ্যে পালাবদল ইস্তক নদিয়ায় ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। একের পর এক নির্বাচনে তার সাক্ষ্য মিলেছে। তাদের রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে গায়ে-গতরে বেড়েছে বিজেপি, বিশেষত উদ্বাস্তুপ্রধান এলাকায়। ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না অতিবড় বাম সমর্থকও। কিন্তু নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তারা প্রথম থেকেই রাস্তায়। জেলাস্তরে দু’একটা পথসভা ও মিছিলের বাইরে যখন তৃণমূলকে সে ভাবে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না, বামেরা ক্ষীণ শক্তি নিয়েও ধর্মঘট সফল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

গত শুক্রবার থেকেই স্কুলে-স্কুলে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকদের কাছেও ধর্মঘট সফল করার আবেদন করছে এসএফআই। পড়ুয়া ও অভিভাবকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আবেদনও করা হয়েছে। ধর্মঘট সফল করার জন্য তারা বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শান্তনু সিংহ বলেন, “বুধবার আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পিকেটিং করব। সেই সঙ্গে ধর্মঘট সফল করার জন্য আর যা-যা করার, সেটাও করব।”

একই রকম সক্রিয় সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ-ও। তারা জেলা জুড়ে পথসভা করার পাশাপাশি ট্রেনে এবং স্টেশনেও ঘুরে প্রচার করছে। সোমবার শিয়ালদহ ও লালগোলা শাখায় সকাল থেকে যাত্রীদের মধ্যে তারা প্রচার চালিয়েছে। প্রচার করা হচ্ছে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। সংগঠনের জেলা সম্পাদক রুদ্রপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “শুধু প্রচার নয়, ৮ জানুয়ারি আমরা সকাল থেকে পথে থাকব। পথেই দেখা হবে সকলের সঙ্গে।”

সিপিএম প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন সিটু বিভিন্ন কলকারখানা, বাস ও অন্য পরিবহণ ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিকদের কাছে গিয়ে ধর্মঘট সমর্থনের আর্জি জানিয়েছে। জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিড়ি শ্রমিকরা। শিক্ষক সংগঠনগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পাশাপাশি জেলার স্কুল পরিদর্শকদের কাছেও আবেদন করছেন ধর্মঘট সমর্থন করার জন্য। আবেদন করা হচ্ছে দোকানদারদের কাছেও। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, “আমরা মানুষের কাছে নানা ভাবে আবেদন রাখছি। বুধবার আমরা একযোগে পথে নেমে শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্মঘট সফল করব। যদি প্রশাসন কোথাও অশান্তি করার চেষ্টা করে, দায় থাকবে প্রশাসনেরই।”

সিপিএমের পাশাপাশি অন্য বাম শরিকেরাও সর্বশক্তি দিয়ে ধর্মঘট সফল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারাও নিজেদের মতো করে প্রচার করছে। আরএসপির জেলা সম্পাদক শঙ্কর সরকার বলছেন, “আমাদের ছাত্র, যুব, শ্রমিক সংগঠনও রাস্তায় নেমে প্রচার করছে। ধর্মঘটের দিন সকলে রাস্তায় থাকবে, দেখে নেবেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Bandh JNU Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy