রথের জিলিপিও চলল প্লাস্টিকে। কৃষ্ণনগরে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ এই মুহূর্তে মানব সভ্যতার কাছে অন্যতম চিন্তার বিষয়। কিন্তু সে কথা শুনছে কে! জেলার অন্য অনেক জায়গার মতোই কৃষ্ণনগরে অবাধে চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার।
এমনিতেই এই শহরে নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা। তার উপর নর্দমায় প্লাস্টিক জমে সেই সমস্যাকে আরও ভয়ানক করে তুলছে বছরের পর বছর। নর্দমা বাহিত হয়ে সেই প্লাস্টিক মিশছে জলঙ্গী নদীতে। তাতে নদীও বাদ যাচ্ছে না।
অথচ সাধারণ মানুষ, ক্রেতা, বিক্রেতা, পুরসভা, প্রশাসন কোনও তরফেই এই বিষয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। নেই কোনও নিষেধাজ্ঞা, নেই কোন নজরদারি। ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে সচেতনতা প্রসারেও কেউ উদ্যোগী হননি। সাধারণ মানুষ ক্যারিব্যগে জিনিসপত্র আনছেন এবং তারপর সেই ক্যারিব্যাগ ফেলছেন যত্রতত্র।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, পুরসভা বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি উদাসীন। কোনও রকম পদক্ষেপই দেখা যায় না। তবে একেবারে যে পদক্ষেপ করা হয়নি তা নয়। বছর সাতেক আগে চারটি দল করে কর্মীরা শহরের বাজারে বাজেরে ঘুরেছিলেন। জরিমানাও করা হচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায় পাত্রবাজারে এসে। সেখানকার মাছ বাজারে ব্যবসায়ীরা বটি হাতে তাঁদের দিকে তেড়ে গিয়েছিল বলে পুরসভা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। সেই থেকে অভিযান বন্ধ। কারণ কর্মীরা নাকি নিরাপত্তার কারণে আর অভিযান চালাতে রাজি হননি।
পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘কর্মীরা তো আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজটা করতে যাবেন না। তাছাড়া নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে। তাঁরা কেন সচেতন হয়ে ক্যারিব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করবেন না? তাঁরা কেন নর্দমায় ক্যারিব্যাগ ফেলবেন?’’
যে বাজারে গিয়ে কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ, সেই পাত্রবাজারের ব্যবসায়ীরা কিন্তু শোনাচ্ছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, পুরসভা বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগী হলে কিন্তু প্লাস্টিক বা ক্যারিব্যাগ ব্যবহার অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। কী ভাবে? শহরের সব চেয়ে বড় বাজার হল পাত্র বাজার। সেই বাজার কমিটির সম্পাদক তারক হালদার বলেন, “আরে আমরা তো ক্যারিব্যাগ দিতে না হলে বাঁচি। কিন্তু খদ্দেররা তো শুনতে চান না। তাঁরা ক্যারিব্যাগ না দিলে মাল নিতে চান না। অন্য দোকানে চলে যান।”
তবে পরিস্থিতি যে ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছেন কৃষ্ণনগর পুরসভার কর্তারা। তৃণমূলের প্রাক্তন পুর প্রধান তথা অন্যতম প্রশাসক অসীম সাহা বলেন, “সমস্যা ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। আমরা মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়েছি এই বিষয়টা নিয়ে বৈঠক করার জন্য। শহরকে দ্রুত প্লাস্টিক মুক্ত না করতে পারলে বিপদ আছে। যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy