প্রতীকী চিত্র
কাঁটার নাম কাটমানি!
কখনও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দিতে, কখনও স্টেডিয়ামের পাঁচিল গড়তে অলিখিত শর্তই ছিল কাটমানি। টেন্ডারের ক্ষেত্রেও কাটমানি নতুন কিছু নয়। বিষয়টি অজানা ছিল না কারও। তবুও কেউ এত দিন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করেননি। কিন্তু ‘কাটমানি’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া অবস্থান নেওয়ার পরেই শুরু হয়েছে হইচই। কারণ, মমতা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, অভিযোগ উঠলে দলের নেতাদেরও রেয়াত করা হবে না।
তার পরেই দেখা গেল, কাটমানি রোগ ছড়িয়েছে গোটা জেলাতেই। বহু জায়গায় বিস্তর অভিযোগও জমা পড়েছে। কিন্তু দু’একটি ঘটনা ছাড়া টাকা ফেরতের তেমন নজির নেই মুর্শিদাবাদে। জেলা পরিষদে প্রায় ১০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ক্ষেত্রেও অভিযোগের তদন্তের ফল সামনে আসেনি।
সেই কাটমানি রুখতেই এ বার পথে নামল সাগরদিঘির ব্লক প্রশাসন। ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দু’শোরও বেশি গ্রামের লোকজনকে কাটমানি নিয়ে সচেতন করতে শুরু হল মাইকে প্রচার। সাগরদিঘিতে এক আদিবাসী মহিলার ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন দোহাল গ্রামের দুই যুবক। তাঁদের মধ্যে গ্রামের সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া এক জন পঞ্চায়েত সদস্যও ছিলেন।
ওই মহিলা সরাসরি বিডিওকে অভিযোগ করেন, কী ভাবে গ্রামেরই যুবক তাঁর পাওয়া ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগ পেয়েই দু’সপ্তাহের মধ্যে সেই কাটমানির টাকা অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করে আদিবাসী মহিলাকে ফিরিয়ে দিয়ে নজির গড়েন সাগরদিঘির বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু।
শুভজিৎ বলছেন, “অসহায় হয়েই মানুষ কাটমানি দিতে বাধ্য হন। তবে এ সবের তো কোনও প্রমাণ থাকে না। অভিযুক্তদের দু’জনকে অফিসে ডেকে এনে ধমক দিতেই বেরিয়ে পড়ে সত্যিটা। সে ভাবেই ওই মহিলাকে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’’
এর পর থেকেই সমস্ত প্রকল্পেই উপভোক্তাকে অফিসে ডেকে সভা করে বলে দেওয়া হচ্ছে যাতে কেউ কাটমানির ফাঁদে না পড়েন। প্রতিটি পঞ্চায়েতে টাঙানো হচ্ছে, যাঁরা ঘর পেয়েছেন তাঁদের নামের তালিকা। কোন কিস্তির কত টাকা উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কখন পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা-ও।
এক উপভোক্তা জানাচ্ছেন, কিন্তু মুশকিলটা হচ্ছে তাঁদের অনেকেই লেখাপড়া জানেন না। ফলে তাঁদের নির্ভর করতে হয় অন্যের উপর। আর তারই সুযোগ নিয়ে চলে কাটমানির খেলা। কিন্তু সেই খেলা কি এখনও চলছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy