Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Independence Day

স্বাধীনতার পরবে সতর্ক গোয়েন্দারা

একে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি, তার উপরে স্বাধীনতা দিবসের আগে জঙ্গি তৎপরতার আশঙ্কা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

গ্রামে কি কোনও অচেনা ফেরিওয়ালা প্রায়ই ঘোরাফেরা করছে? কিংবা কারও বাড়িতে এসে থাকছেন কোন অচেনা মানুষ? গত কয়েক দিন ধরে প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছেন জেলার গোয়েন্দারা।

একে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি, তার উপরে স্বাধীনতা দিবসের আগে জঙ্গি তৎপরতার আশঙ্কা। ঘটনাচক্রে, রবিবারই মধ্যপ্রদেশের ইনদওর থেকে ধরা পড়েছে খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত, থানারপাড়ার জহিরুল শেখ।

গোয়েন্দাদের মতে, এখনই নদিয়ায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা তেমন নেই। কিন্তু তা বলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই জেলা নিয়ে ঢিলেঢালা থাকাও কঠিন। কেননা এই জেলা জঙ্গিদের করিডর বা গোপন আস্তানা হিসেবে ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা বিপুল। বিশেষত জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (‌জেএমবি) সুযোগ পেলে অঘটন ঘটাতে পারে। তা ছাড়া, কাশ্মীরে লড়ার জন্য ‘জিহাদি’ চেয়ে সম্প্রতি বাংলায় বিলি করা জঙ্গিদের লিফলেটও পাওয়া গিয়েছে। তাই জেলা জুড়ে পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি রাখছে। এর আগে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত অভিযোগে কালীগঞ্জের মির্জাপুর থেকে গ্রেফতার হয়েছিল মাদ্রাসার করণিক গিয়াসুদ্দিন মুন্সি এবং চানাচুরের ফেরিওয়ালা মতিউর রহমান। বছরখানেক আগে হাঁসখালির গাজনা এলাকার এক যুবককে আবার জেএমবি-র সক্রিয় সদস্য সন্দেহে মহারাষ্ট্রের পুণে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের আগে, রবিবারই গ্রেফতার হয়েছে জহিরুল। ফলে গোয়েন্দারা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।

নদিয়া জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, জেলার উপরে নজর রাখছে ‘র’ থেকে শুরু করে সেন্ট্রাল আইবি, স্টেট আইবি ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বিএসএফের গোয়েন্দারাও বিভাগও নজরদারি চালাচ্ছেন। জেলা গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তা বুধবার জানান, শুধু সীমান্ত এলাকায় নয়, জেলার প্রতিটা থানাই সতর্ক রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে, কোনও গ্রামে বাইরে থেকে এসে কেউ থাকছে কিনা, নজর রয়েছে ফেরিওয়ালাদের উপরেও। কোনও বাড়ি দীর্ঘ দিন ফাঁকা পড়ে থাকলে বা বাড়ির মালিক বাইরে থাকলে, সেখানে কোনও ভাড়াটিয়া থাকলেও নজর রাখা হচ্ছে।

গোয়েন্দা দফতরের ওই কর্তার মতে, “জেএমবি-র মতো সংগঠনগুলি প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের টাকার লোভ দেখিয়ে সংগঠনে টানার চেষ্টা করছে। ফলে তৃণমূল স্তরে নজরদারি প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।” জেলায় কোনও রোহিঙ্গা এসে আশ্রয় নিয়েছে কি না, সেই খবরও রাখছেন গোয়েন্দারা। জেলার এক গোয়েন্দা কর্তার দাবি, “প্রায় দশ মাস আগে কয়েক জন রোহিঙ্গা হরিণঘাটায় ঢোকার চেষ্টা করেছিল। আমরা তাদের হটিয়ে দিয়েছি। জেলার মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কোন রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নই।”

সারা বছর ধরে নজরদারি চললেও ১৫ অগস্টের আগে প্রত্যাশিত ভাবেই তা অনেক গুণ বেড়ে যায়। ১৩ অগস্ট থেকেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি। স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড, বড় অফিস, শপিং মলের আশপাশে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে রাখা হয়েছে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদেরও। সীমান্ত এলাকায় পুলিশ এবং বিএসএফ যৌথ টহল দিচ্ছে। বর্ডার রোডে অনেক বেশি টহল চলছে। বাড়ানো হয়েছে জওয়ানের সংখ্যা। বিশেষ করে নদী সীমান্ত এবং যেখানে কাঁটাতার নেই, সেখানে নজরদারি অনেক বেশি বলে বিএসএফ সূত্রের খবর। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিএসএফের সঙ্গে যৌথ তল্লাশি চলছে। আমরা কোথাও কোনও ফাঁক রাখিনি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE