Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Inner conflict

বর্ষীয়ানদের বসিয়ে রেখেই প্রস্তুতি সভার

দলের সাম্প্রতিক রদবদলে কার্যত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক বর্ষীয়ান নেতা।

অজয় দে, শঙ্কর সিংহ। নিজস্ব চিত্র।

অজয় দে, শঙ্কর সিংহ। নিজস্ব চিত্র।

সম্রাট চন্দ
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৪৭
Share: Save:

বিধানসভা ভোটের মুখে এই প্রথম কাল, সোমবার রানাঘাটে সভা করতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু সভার ৪৮ ঘণ্টা আগেও প্রস্তুতি নিয়ে কার্যত ব্রাত্যই রাখা হল দলের একাধিক বর্ষীয়ান নেতাকে। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক এবং গৌরীশঙ্কর দত্ত, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর সিংহ এবং শান্তিপুরের পুর প্রশাসক অজয় দে এমনই তিনটি নাম। তিন জনেই অবশ্য জানাচ্ছেন, সভায় যাবেন।

দলের সাম্প্রতিক রদবদলে কার্যত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক বর্ষীয়ান নেতা। গৌরীশঙ্কর দত্ত জেলায় আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন। আর এক সময়ে দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা শঙ্কর সিংহ এবং শান্তিপুরের দীর্ঘদিনের নেতা অজয় দে-কে রাখা হয়েছে উপদেষ্টামণ্ডলীতে। নিচুতলায় ডানা ছাটা হয়েছে তাঁদের ঘনিষ্ঠদের। তাঁর সঙ্গে কথা না বলেই তাঁর এলাকায় পদে রদবদল ঘটানো হয়েছে বলে আক্ষেপ শঙ্করের। এর আগে দলের কর্মী সম্মেলনেই সেই ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন শঙ্কর। রদবদলের পরে সেই একটিই কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে।

শান্তিপুরেও সাংগঠনিক দায়ভার কার্যত বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠদের হাতে তুলে দিয়ে ডানা ছাঁটা হয়েছে অজয় দে-র। দলের একাধিক কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকেও। তবে সম্প্রতি ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ কর্মসূচিতে শান্তিপুর শহরে দু’টি বড় পদযাত্রা করে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন তিনি। তবে নেত্রীর জনসভার প্রস্তুতি পর্বে তাকে দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক অতীতে দলের বড় বড় কর্মসূচির ক্ষেত্রে এই প্রবীণ নেতাদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এ বারে তার ব্যতিক্রম।

রানাঘাট ১ ব্লকের যে অংশে তৃণমূল নেত্রীর সভা হচ্ছে তা রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভার অন্তর্গত না হলেও তার ধার ঘেঁষে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার মধ্যে পড়ে। তবে রানাঘাট মহকুমা তো বটেই জেলার এক বড় অংশে যাঁর রাজনৈতিক প্রভাব এখনও প্রশ্নাতীত সেই বিধায়ক শঙ্কর সিংহকে এখনও কোনও প্রস্তুতি সভাতেই দেখা যায়নি। আদৌ কি দলের তরফে তাকে ডাকা হয়েছিল? কোনও রাখঢাক না করেই শঙ্কর বলেন, “দলের জেলা নেতৃত্ব এই সভা নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন হয়তো বোধ করেননি। তবে দলের নেত্রী আসছেন, সেই সভায় অবশ্যই যাব। সহযোগিতাও করব।” শান্তিপুরের অজয় দে-ও বলছেন, “আমার সঙ্গে সভা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেননি। তবে নেত্রী যখন আসছেন, সেই সভায় যাব।”

গৌরীশঙ্কর দত্তকেও এখনও সে ভাবে এই জনসভা নিয়ে প্রস্তুতিতে দেখা যায়নি। রাজ্যে পট পরিবর্তনের আগে থেকেই দীর্ঘদিন (মাঝে কিছু সময় বাদ দিয়ে) নদিয়ায় দলের রাশ ছিল তাঁরই হাতে। সেই গৌরীশঙ্করকে কি জেলা নেতৃত্ব কোনও ভাবে যুক্ত করতে চেয়েছেন? পোড় খাওয়া নেতার কুশলী উত্তর, “দলের সর্বোচ্চ নেত্রী আসছেন। এখানে কে কাকে যুক্ত করবে? আমরা সবাই যুক্ত আছি।”

সামনেই বিধানসভা ভোটের শক্ত লড়াই। নদিয়ায়, বিশেষত রানাঘাট-সহ দক্ষিণাংশে বিজেপির উত্থান হয়েছে আগেই। সেখানে এই নেতারা, যাঁরা জেলায় একাধিক রাজনৈতিক উত্থান-পতনের সাক্ষী তাঁদেরই মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখা হচ্ছে কেন জেলায় দলনেত্রীর প্রথম নির্বাচনমুখী সভায়?

জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর দীপক বসুর দাবি, “ওঁদের পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে তো। ওঁরাও পরামর্শ দিচ্ছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Inner conflict TMC Rangaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy