Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নৌকা অমিল, রাতে ঘাটেই মৃত্যু প্রৌঢ়ার

পরিবারের মতে, যদি সময় মতো নৌকা পাওয়া যেত তা হলে সাবিত্রী হয়তো মারা যেতেন না। তাঁর মৃত্যুর পরেই ঘাটের ঘারে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকজন মিলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

ফেরিঘাটে গিয়েও নৌকার অপেক্ষায় থেকে পার হতে না পেরে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। বছর পঞ্চান্নের মহিলার নাম সাবিত্রী মণ্ডল। কালীগঞ্জ ব্লকের জুরানপুরের ছুটিপুরের বাসিন্দা তিনি।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুকে যন্ত্রণা হওয়ায় বাড়ির লোকজন ও পাড়াপড়শি সাবিত্রীকে নিয়ে পূর্ব বর্ধমানে কাটোয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তার জন্য ভাগীরথী ও অজয়ের সঙ্গমস্থল পার হতে হবে। বল্লভপাড়া ঘাটে যখন তাঁরা পৌঁছন, তখন রাত সাড়ে ৮টা। কোনও নৌকার দেখা না পেয়ে ঘাটের দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে ফোন করেন তাঁরা। তিনি জানান, রাতে পারাপার না করার নির্দেশ রয়েছে প্রশাসনের, কোনও নৌকা যেতে পারবে না। ওই ঘাটে শুয়েই সাবিত্রীর মৃত্যু হয়।

পরিবারের মতে, যদি সময় মতো নৌকা পাওয়া যেত তা হলে সাবিত্রী হয়তো মারা যেতেন না। তাঁর মৃত্যুর পরেই ঘাটের ঘারে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকজন মিলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কেন রাতে অত দূর যেতে হচ্ছিল?

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবিত্রীর বাড়ি যে অঞ্চলে, সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু তার শুধু মাত্র বহির্ভাগ খোলা থাকে। কালীগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রায় এক ঘণ্টার রাস্তা। তাই পরিজনেরা ঘাট পার করে কাটোয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন সাবিত্রীকে। কিন্তু রাতে নৌকা না চলায় তা করা যায়নি। এ দিন স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, কালীগঞ্জের বাস্ততম বল্লভপাড়া ঘাটে রাতেও চলাচলের আশু ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা শুনে আসছেন, এই ঘাটের উপর দিয়ে সেতু তৈরি হবে। তা এখনও কেন বাস্তবায়িত হল না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাপ্পা সাহা বলেন, ‘‘নৌকা না পাওয়ায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের দাবি, অবিলম্বে সেতুর ব্যবস্থা করতে হবে। যত দিন তা না হয়, তত দিন অন্তত রোগীদের জন্য দিবারাত্র পারাপারের ব্যবস্থা করতে হবে।’’ মৃতের ভাইপো প্রভাত মণ্ডল বলেন, ‘‘এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়, প্রশাসন তা নিয়ে তৎপর হোক।’’

বল্লভপাড়া ঘাটের মালিক অশোক সরকার অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এতে আমাদের কিছুই করার নেই। সারা বছরই রাত সাড়ে ৮টায় নৌকা বন্ধ হয়ে যায়, তা সকলেরই জানা। তার পরেও এক জন নিজের দায়িত্বে লোক পারাপর করে, কিন্তু ঘাট মালিকের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অনেক সময়ে জরুরি রোগী এলে আমাদের নৌকা পারাপার করে দেয়। কিন্তু গত কয়েক দিন অজয় নদের জল বেড়ে যাওয়ায় এবং অত্যধিক কচুরিপানা ভেসে আসায় পারাপার কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

কৃষ্ণনগর সদরের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘ওই ঘাটের সকল বিষয় দেখে পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসন। যাতে রোগীদের পারাপারে সমস্যা না হয়তা নিয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তবে এই মুহূর্তে তা সম্ভব নয়। কারণ এখন ভাগীরথীর জল অনেক বেড়ে রয়েছে। জল কমলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Old Woman Kaliganj Agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy