Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
অধীরের প্রতি অনুব্রত

বোম মারব না, মারতে দেব না

এক দিকে জোটের মিছিল থেকে তৃণমূলের মহিলাদের গায়ে মদ ছোড়া ও গালিগালাজের অভিযোগ। অন্য দিকে, এক ইঞ্চি জমি না ছাড়ার হুঙ্কার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। প্রচারের স্লগ ওভারে চালিয়ে খেলছে দু’পক্ষই।

ডোমকলের জনকল্যাণ মাঠের সভায় অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

ডোমকলের জনকল্যাণ মাঠের সভায় অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন
ডোমকল শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০১:৩৪
Share: Save:

এক দিকে জোটের মিছিল থেকে তৃণমূলের মহিলাদের গায়ে মদ ছোড়া ও গালিগালাজের অভিযোগ। অন্য দিকে, এক ইঞ্চি জমি না ছাড়ার হুঙ্কার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। প্রচারের স্লগ ওভারে চালিয়ে খেলছে দু’পক্ষই।

সকলেই বুঝছে, ভোট যত কাছে আসছে, চেনা মেজাজেই তেতে উঠছে ডোমকল। ঠিক যে ভাবে তেতে ওঠে প্রতি ভোটের আগে আর লাশ পড়ে। তাই কে কাকে বোমা ছুড়বে না, গুলি করবে না, তা আগাম জানিয়ে রাখার প্রতিযোগিতাও চলছে।

সেই সঙ্গেই রয়েছে ছেড়ে আসা পুরনো দল কত খারাপ, তার ব্যাখ্যান দেওয়ার দৌড়। তার এক দিকে যদি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা মানস ভুঁইয়া, অন্য দিকে তৃণমূলেও গিয়েও ফের কংগ্রেসে ফেরা হুমায়ুন কবীর।

বাম-কংগ্রেস জোটের সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকেদের তরজায় বুধবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়ায় ডোমকল হাসপাতাল মোড়ে। রাস্তায় বসে পড়েন তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা পরিষদের সহকারী সভাপতি শাহনাজ বেগম। পরে আসেন করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। পুলিশ এসে গোটা ঘটনা সামাল দেয়।

তৃণমূলের অভিযোগ, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তাদের মহিলাদের মিছিল রঘুনাথপুরের দিকে যাচ্ছিল। উল্টো দিক থেকে আসছিল জোটের মিছিল। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাদের মত্ত যুবকেরা মেয়েদের গায়ে মদ ছোড়ে, শাড়ি ধরে টান দেয়, গালাগাল করে। তৃণমূলের সৌমিক হোসেনের হুঁশিয়ারি, ‘‘মহিলাদের এই অপমান আমরা মানব না।’’

কংগ্রেস নেতা মসিউর রহমান অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘দিনের বেলায় এমন ঘটনা ঘটতেই পারে না। বরং মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের কর্মী মেহেরুল ইসলামকে মারধর করেছে তৃণমূলের গুন্ডারা।’’ সভায় সিপিএম সাংসদ বদরুদ্দোজা দাবি করেন, ‘‘গোপনে পুলিশের পোশাক তৈরি করছে তৃণমূল। দলীয় কার্যালয়ে হেলমেট জোগাড় করছে।’’ শহরের জনকল্যাণ মাঠের সভায় অধীর দাবি করেন, ‘‘শুনছি, ডোমকলের আইসি তৃণমূলের লোকেদের দানা (কার্তুজ) দিচ্ছেন। ওগুলো ভীরু, কাপুরুষদের দরকার হয়। এ বার বোমা বাড়িতে রেখে আসতে হবে তৃণমূলকে।’’

নিজের জেলা বীরভূমে ‘পুলিশকে বোম মারুন’ বলে নাম করলেও অনুব্রত অবশ্য এখানে এসে উল্টো সুর ধরেছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অধীরবাবু, আমরাও বোম মারব না আর আপনাকেও মারতে দেব না।’’ তাঁদের ‘দানা’ দরকার নেই জানিয়েও অধীর অবশ্য কর্মীদের জানিয়ে দেন, ‘‘এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না আমরা। যদি আপনাদের উপরে অত্যাচার হয় আমরা কিছুই মানব না।’’

জার্সি বদলের মহিমাও এ দিন দেখেছে ডোমকল। চিরকালই অধীর-বিরোধী বলে পরিচিত মানস ভুঁইয়া প্রচারসভায় আক্ষেপ করেন, ‘‘৪৬ বছর কংগ্রেস করেছি, বঞ্চনা ছাড়া কিছুই মেলেনি। এখন রাজ্য কংগ্রেস আবার এক জনের (পড়ুন, অধীরের) জমিদারি!’’ রেজিনগরের প্রাক্তন বিধায়ক, পরে তৃণমূলের মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর ধরেছেন উল্টো সুর। ঝাঁকে-ঝাঁকে শাসকদলের তারকা নেতাদের প্রচারে আসা নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের চোরদের জন্য রাজ্য থেকে অনেক চোর আসছেন ডোমকলে। সাবধানে থাকুন, সতর্ক থাকুন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy