ভরতপুর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর ফাইল চিত্র।
শাসক দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে পুলিশ। যে ঘটনায় এখন এলাকা, জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি ভরতপুর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর ভরতপুর থানার পুলিশকে হুমকি দিচ্ছেন এমন একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। যদিও সেই ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। ওই ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পরেই শোরগোল পড়ে। ভরতপুর থানার ওসি দশটি ধারায় মামলা করেছেন। যদিও ওই বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে, পুলিশের করা মামলা নিয়ে বিচলিত নন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুন বলেন, “ওই সমস্ত মামলা নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তিত নই। পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে, আমি আমার কাজ করে যাব।” তারপরেই তিনি বলেন, “মামলা নিয়ে আমার ভাবার সময় নেই। দলের প্রতিষ্ঠা দিবস করা, ৩ জানুয়ারি আমার ৫৯ তম জন্মদিন পালন করা তারপর আমাদের নেত্রীর ৬৭ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ৬৭ কেজি ছানাবড়া নিয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। সেই সমস্ত নিয়েই ব্যস্ত আছি। মামলা নিয়ে পরে ভাবা যাবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ডিসেম্বর দলীয় কর্মীদের নিয়ে কর্মী সভা করেছিলেন বিধায়ক হুমায়ুন। ওই কর্মিসভায় ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা নিয়ে আলোচনায় সময় দলীয় কোন্দলের মধ্যে পুলিশকে লক্ষ্য করে একাধিক হুমকি দিয়েছিলেন এবং ওই হুমকি দেওয়ার ভিডিও বৈঠকের পর থেকেই সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
তার পরপরই পুলিশ অবশ্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে ভরতপুর থানার ওসি রাজু মুখোপাধ্যায় বিধায়কের বিরুদ্ধে মোট দশটি ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেন। তার মধ্যে তিনটি ধারা জামিন অযোগ্য ধারা। তার মধ্যে পুলিশকে হুমকি দেওয়া, থানা ঘেরাও করা, এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি করা ও থানায় গিয়ে সরকারি সম্পত্তির উপর পা তুলে বসার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যদিও বিধায়ক হুমায়ুন বলেন, “ওই সমস্ত বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারব না।”
বিধানসভা ভোটের পর থেকে ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভরতপুর ১ ও ২ ব্লকের দলের তিন জন সভাপতির বিরুদ্ধে দিনের পর দিন সুর চড়াচ্ছিলেন। এলাকার শাসক দলের একাংশের দাবি, “হুমায়ুন যে ভাবে পুলিশ ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন সুর চড়িয়ে ছিলেনে, সেটা যে তাঁরা ভাল চোখে দেখছেন না, সেটা প্রদেশ নেতৃত্বও বুঝিয়ে দিয়েছেন।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সাল থেকে হুমায়ুন সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবটাই বাম বিরোধী রাজনীতি। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে থাকার পর ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হওয়ার পর তৃণমূলে যোগ দেওয়া। পরে ফের অধীরের কাছে ফিরে যাওয়া, বিজেপিতে যোগ দিয়ে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়া, ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়া এবং ভরতপুর কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হওয়া। ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বাম জমানায় ২১টি মামলা, পরে তৃণমূলের জমানায় আরও ৬টি মামলা মোট ২৭টি মামলা হয়েছে।
ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন বলেন, “বামেদের দেওয়া ২১ টি মামলার মধ্যে ১৭টি মামলা মিটে গিয়েছে, আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ করতে পারেনি। এখন কলকাতার ময়ূখ ভবনে ৮টি, বহরমপুর জজ কোর্টে ২টি, এ বার সদ্য যুক্ত হল ভরতপুরের মামলা। সব মিলিয়ে ১১টি মামলা হল। আমি ওই মামলাকে ভয় পাই না।”
দলের বিধায়ক হুমায়ুনের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করার প্রসঙ্গে দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, “আমি এখনও জানি না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy