এসো বই পড়ি। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনে ওদের অনেকের পরিবারে একমাত্র রোজগেরে কাজ হারিয়েছেন। সংসার চালাতে ওদের অনেককেই বাবা কিংবা মা-কে সাহায্য করতে হয়। তার মধ্যেই করোনা আবহে টানা প্রায় ১০ মাস স্কুল বন্ধ। এই অবস্থায় বইপত্রের সঙ্গে সম্পর্ক চুকে যেতে বসেছিল ওদের অনেকেরই। শক্তিপুর এলাকার এমন কিছু দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের নিখরচায় পড়ানোর ভার তুলে নিয়েছে ওই এলাকার কমবয়সী একদল ছেলেমেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শক্তিপুরের ওই সব বাচ্চারা প্রায় সকলেই দুঃস্থ পরিবারের। অনেক জায়গায় অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ থাকলেও অধিকাংশ পড়ুয়ার স্মার্টফোন নেই। নেই ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থাও। টাকা দিয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা কেনার মতো আর্থিক অবস্থাও নেই বাড়ির। ফলে পড়াশোনা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাদের। পিছিয়ে পড়তে থাকা সেই ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ওই এলাকার কয়েকটি স্কুলের উঁচু ক্লাসের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা। শক্তিপুর এলাকার এই বাসিন্দারা এলাকার বিধুপাড়া ও তালডাঙা এলাকায় গিয়ে গত প্রায় দেড় মাস ধরে নিখরচায় পড়াচ্ছেন দুঃস্থ পরিবারের বাচ্চাদের। মূলত নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১২০ জন ছাত্রছাত্রীকে তারা পড়াচ্ছে। বেলা সাড়ে ১০ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ক্লাস চলে। সোম থেকে শনিবার। একটি সংস্কৃতিপ্রেমী সংগঠনের সদস্য সৌরভ চক্রবর্তী প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকেন। এছাড়া, স্কুলের ছাত্রী রিনি হালদার, মধুমিতা ঘোষ, নিকিতা ঘোষ, বিজয়া ঘোষ, রূপসা ঘোষরা শিশুদের ক্লাস নেওয়ার কাজ করে। তাদের সঙ্গে থাকেন দোপুকুরিয়া স্কুলের শিক্ষক গোলাম সারোয়ার। এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাঁরা পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রছাত্রীদের খুঁজে বের করে পড়ান। সৌরভ বলেন, “স্কুল বন্ধ। পরীক্ষা হচ্ছে না। ওদের পরিবারের সদস্যরাও অনেকের অক্ষরজ্ঞান নেই। ফলে বাচ্চারা বই থেকে দূরে চলে গিয়েছিল। ওদের আবার বইমুখো করতে পেরে ভাল লাগছে।’’ আর ‘রিনি দিদি, রূপসা দিদি’দের কাছে পড়াশোনা করতে সপ্তাহে ছ’দিনই হাজির অর্জুন হাজরা, সুজয় বাগদী, সঙ্গীতা বাগদীরা। তাদের পরিবারের সদস্যরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। স্যররা সেই চিন্তা দূর করে দিয়েছেন।’’ অভিভাবকরা জানাচ্ছেন, পড়াশোনার সঙ্গে আঁকা, নাচও শেখানো হচ্ছে ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy