Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
এনআরসি’র ছায়া

‘বলব কেন’, ঘেরাও হলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

স্বাস্থ্য কর্মী কিংবা রেশন ডিলারদের তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশ্চুপে পাচার করছে— এই অভিযোগে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল হরিহরপাড়ার মামুদপুর গ্রাম।

পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

সরকারি সমীক্ষাতেও এনআরসি জুজু!

নয়া নাগরিকত্ব আইনের ছায়ায় সবেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আমজনতা। যার জেরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে বাধা তো বটেই বিক্ষোভের মুখেও পড়ছেন বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা। বাদ পড়ছেন না স্বাস্থ্যকর্মী থেকে রেশন ডিলাররাও।

স্বাস্থ্য কর্মী কিংবা রেশন ডিলারদের তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশ্চুপে পাচার করছে— এই অভিযোগে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল হরিহরপাড়ার মামুদপুর গ্রাম। এ দিন সকালে মামুদপুর গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিমা মন্ডলকে (এ.এন.এম) ঘেরাও করে গ্রামবাসীরা। ঘেরাও করা হয় রেশন ডিলার খোদাবক্স মণ্ডলের বাড়িও। তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের বাসিন্দারা। প্রায় ঘণ্টাদেড়েক হরিহরপাড়া আমতলা রাজ্যসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন বিডিও পুর্ণেন্দু সান্যাল, আসে পুলিশ বাহিনী।প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। প্রশাসনের কর্তারা গ্রামে সাধারন মানুষের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরে তাঁদের বুঝিয়ে শেষতক অবরোধ তোলেন। গ্রামের বাসিন্দা মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এনপিআর কিংবা এনআরসি আমাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কেউ কিছু তথ্য চাইলেই মনে হচ্ছে ভিটে ছাড়া করার পদক্ষেপ শুরু হল! এরই মধ্যে আশা দিদিরা সার্ভের নামে তথ্য জানতে এসেছিল। আমরা ভয় পেয়ে ঘেরাও করি।’’

রেশন ডিলারের বাড়িতেও, নথি পাচার হচ্ছে মনে করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অনেকে আবার ডিলারের জমা নেওয়া নথি বিশেষ করে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ফেরানোর দাবি তোলেন।

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘ইন্দ্রধনুষ টিকাকরন কর্মসূচিতে কোনও শিশু বাদ না পড়ে সে জন্যই স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করছেন। কিন্তু তা করতে গিয়েও যদি গ্রামাসীদের রোষের মুখে পড়েন, কাজটা হবে কী করে!’’ এম.আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের ব্লক সম্পাদক বাবর আলি খান বলছেন, ‘‘দফতরের নির্দেশে প্রতিটি রেশন দোকানে খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় আধার কার্ডের সংযুক্তিকরন চলছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে যদি মার খেতে হয়। কে এগোবে বলুন!’’ এ দিন জনসাধারণ মানুষ যাতে অযথা বিভ্রান্তিতে না পড়েন এর জন্য ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা কথা বলেন গ্রামের মানুষের সঙ্গে। হরিহরপাড়ার বিডিও পুর্ণেন্দু সান্যাল বলেন, ‘‘গ্রামের বাসিন্দারা ভুল বুঝেছিলেন, আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।’’ জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ ও কুটির শিল্প দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সামসুজ্জোহা বিশ্বাসও গ্রামের বাসিন্দাদের আস্বস্ত করে বলেন, ‘‘খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় অর্থাৎ রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরনের প্রশ্নে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। ভুল বুঝবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Worker Survey NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy