হাজারদুয়ারি। নিজস্ব চিত্র।
মন ভাল নেই নবাবনগরী মুর্শিদাবাদের। প্রতি বছরই শীত এলেই পর্যটকদের কোলাহলে ভরে ওঠে। কিন্তু কোভিড এসে সব কিছু যেন ওলটপালট করে দিয়েছে। সেই কোলাহলও নেই, কমেছে পর্যটকদের আনাগোনাও। কোভিড এবং লকডাউনের জেরে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকলেও পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতেই পর্যটকদের জন্য হাজারদুয়ারির দরজাও খুলেছে। কিন্তু হাজারদুয়ারি প্যালেসে এ বার যেন পর্যটকদের ‘আকাল পড়িয়াছে’। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং হোটেল মালিকদের কথায়, “অন্যান্য বছর প্রায় লক্ষাধিক পর্যটক আসেন। কিন্তু এ বছর হাতে গোনা পর্যটক। ফলে আমাদের ব্যবসার পরিস্থিতি খুব খারাপ।”
শীতের আমেজ যখন রাজ্যে তখন ভ্রমণপিপাসু বাংলার মানুষ রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটনস্থলগুলোতে ছুটে যান একটু আনন্দ উপভোগ করতে। সেই তালিকায় বাদ যায়না নবাবনগরী মুর্শিদাবাদও। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জানুয়ারি মাসে প্রায় সব হোটেল বুকিং ছিল। কিন্তু রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ফলে অনেকে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তাই জেলার অধিকাংশ হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন পর্যটকরা। ফলে পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসাও প্রায় থমকে গিয়েছে।
মূলত হাজারদুয়ারি এবং মুর্শিদাবাদের ইতিহাস বিজড়িত স্থানগুলোর দর্শনেই লাখ লাখ পর্যটক ছুটে আসেন। হাজাদুয়ারিকে ঘিরে যেমন পর্যটনশিল্প গড়ে উঠেছে, তেমনই বহু ব্যবসায়ীর রুজি-রুটিও এই শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোভিড সংক্রমণ যেমন একটা কারণ, আরও একটা কারণও পর্যটকদের আনাগোনার উপর প্রভাব ফেলেছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জেলার বিভিন্ন জায়গায় এনআরসি এবং সিএএ-এর বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। কৃষ্ণপুর স্টেশনে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১২টি স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। যার আনুমানিক ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৬ কোটি টাকা। সেই ঘটনার ফলে জেলায় ট্রেন চলাচলের উপর প্রভাব পড়ে। স্বভাবতই প্রভাব পড়ে পর্যটনের উপরও। সেই ঘটনার স্মৃতি আজও টাটকা। ব্যবসায়ীদের মতে, এটাও পর্যটকের সংখ্যা কমার একটা অন্যতম কারণ হতে পারে।
এক ব্যবসায়ীর কথায়, “পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আমরা পর্যটকদের অপেক্ষায় রয়েছি। হাজারদুয়ারি তাঁদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। পর্যটকের আনাগোনা বাড়লে আমাদের ব্যবসাও ভাল হবে।” তাই মুর্শিদাবাদের মন যেমন ভাল নেই, মনখারাপ ব্যবসায়ীদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy