শোকস্তব্ধ। নিজস্ব চিত্র
নয়া আইনের দিকে আঙুলটা উঠেই থাকল।
ভয়ে-আতঙ্কে-অস্থিরতায় জেলার আনাচ কানাচ থেকে ক্রমাগত মৃত্যুর খবর নতুন নয়। সলুয়া থেকে বিলপাড়া, মালোপাড়া কিংবা সাহেবনগর— তরতাজা মানুষ, ভিটে হারানোর ভয়ে রাতারাতি মারা য়াচ্ছেন, আর পরিবারের লোকজন দাবি করছেন, এনআরসি কিংবা নয়া নাগরিকত্ব আইনের জুজুতে দিনভর বাড়ির দলিলের খোঁজ করা মানুষটা মারা গিয়েছেন স্রেফ আতঙ্কে।
সেই তালিকায় বৃহস্পতিবার যোগ হল আরও তিন জনের নাম। এ দিন, হরিহরপাড়া এলাকার মালোপাড়া গ্রামের সানোয়ার ইসলাম (৫৮) এবং পাশের গ্রাম সুন্দলপুরের আমেনা বিবির ( ৫৪) মৃত্যুর পরে দু-বাড়ির লোকই দাবি করেছেন— দিন কয়েক ধরেই গুম হয়ে ছিলেন। এনআরসি’র আতঙ্কে নাওয়া-খাওয়া শিকেয় উঠেছিল। তারই জেরে এই মৃত্যু। সাগরদিঘির সাহেবনগরের বাদশা শেখের (৪৭) পরিবারও তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে নয়া আইনকেই দায়ী করেছেন।
মালোপাড়ার সানোয়ার ইসলাম পেশায় গৃহশিক্ষক। তাঁর দাদা জান্নান মণ্ডল বলেন, ‘‘ভাই বেশ কিছু দিন ধরেই এনআরসি আতঙ্কে ভুগছিল। দিনভর শুধু বলত, ‘গ্রাম ছেড়ে পালাতে হবে গো!’ নতুন আইনই ভাইকে খেল!’’ মৃতের প্রতিবেশী জিয়াউল হক বলছেন, ‘‘সানোয়ারের মতো গ্রামের অনেকেই নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চিন্তায় ডুবে আছেন। আর কত জনকে যে এ ভাবে আতঙ্কে মরতে হবে, কে জানে’’
সুন্দলপুরের আমেনা বিবির পরিবারের লোকজনও বলছেন, ‘‘দিব্যি ছিলেন। নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই ছেলেদের চিন্তায় কেমন গুটিয়ে গিয়েছিলেন। নাওয়া খাওয়া শিকেয় উঠেছিল।’’ মৃতার দেও নজিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমার তিন ভাইপো এক জন আরব দেশে, অন্য দু’জন কেরল ও মুম্বাইয়ে। বৌদি সারা দিন বিড়বিড় করতেন, ছেলেগুলোর কী হবে ভেবে।’’
সাগরদিঘির বাদশা শেখের (৪৭) পরিবারেরও দাবি, ‘‘কলকাতায় কাজ করত। কিন্তু নতুন আইন পাশ হওয়ার পরেই বাড়ি ফিরে আসে। সারা দিন শুধু বাড়ির দলিলের খোঁজ করত। তার পর না পেয়ে চুপ করে বসে থাকত।’’ তাঁর স্ত্রী আসরাফুন বিবি বলেন, “বাড়ি ফিরে বার বার একটাই কথা ছিল ওর, জমির কাগজপত্র কিছু না পেলে কী হবে গো!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy