হাতে কাজ নেই: কাটছে অলস সময়। বেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র
‘পথের পাঁচালী’তে অপু জঙ্গলের মধ্যে গাঁদাল পাতা খুঁজতে খুঁজতে আবৃত্তি করেছিল—‘হলুদ বনে বনে—/নাক-ছাবিটি হারিয়ে গেছে সুখ নেইকো মনে’। বেলডাঙার স্বর্ণশিল্পীদেরও মনে সুখ নেই। না, নাকছাবি হারিয়ে যায়নি। কিন্তু সোনার দাম বাড়তেই থমকে গিয়েছে নাকছাবি তৈরির কাজ।
বেলডাঙার হাতে তৈরি সোনার নাকছাবির সুনাম রয়েছে রাজ্য জুড়ে। দুয়ারে দুর্গাপুজো। এই সময় বিকিকিনি ভাল হয়। কিন্তু হঠাৎ সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। বহু স্বর্ণশিল্পী কাজ না পেয়ে সঙ্কটে পড়েছেন।
বেলডাঙার কয়েকশো স্বর্ণশিল্পী নাকছাবি তৈরি করেন। বেলডাঙার পুরনো ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘এখনও অনেক ক্রেতা ভরিতেই সোনার হিসেব করেন। সেই হিসেবে সোনার দাম প্রায় আট হাজার টাকা বেড়ে গিয়েছে।’’ স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কর্মকার বলছেন, ‘‘যে নাকছাবি ৪৭৫ টাকায় বিক্রি হত, সেটার দাম এখন দাঁড়িয়েছে ৫৭৫ টাকা।” তাঁর সংযোজন, ‘‘পাইকাররা আগের মতো নাকছাবি কিনছেন না। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, সোনার দাম কমে গেলে সব ঘরে আটকে যাবে। সোনার দাম কমবে বলে তাঁরাও অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কমছে কই!’’
ফলে যাঁরা নাকছাবি তৈরি করেন তাঁদের কাজ এখন বন্ধ। বহরমপুরের এক সোনার ব্যবসায়ী অমর মণ্ডল বলছেন, ‘‘পুজোর সময় নাকছাবির চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এ বার সোনার যা দাম তাতে নাকছাবি কতটা বিকোবে বুঝতে পারছি না। তাই নাকছাবিও তুলছি না।’’
বেলডাঙা বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকার বলেন, ‘‘বেলডাঙায় প্রায় ৬০০ জন স্বর্ণশিল্পী আমাদের সমিতির সদস্য। তাঁদের অনেকেই নাকছাবি তৈরি করেন। সোনার দাম বৃদ্ধিতে তারা অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না।” বহরমপুরের অবস্থাও তাই। বহরমপুর বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সম্পাদক গঙ্গাচরণ বসাকও বলছেন, ‘‘সোনার দাম এত বেশি আগে কখনও বাড়েনি। ফলে আমাদের অনেক স্বর্ণশিল্পীরই কাজ পেতে সমস্যা হচ্ছে। জানি না এই অবস্থা কত দিন চলবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy