প্রতীকী ছবি।
সরকারি প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করা হলে ক্ষতিপূরণের অর্থের পাশাপাশি জমিদাতাকে একটি শংসপত্রও দেওয়ার নিয়ম ছিল। যা সরকারি পরিভাষায় ‘এগজেম্পটেড ক্যাটেগরি’ (ইসি)-র শংসাপত্র। সেই শংসাপত্রের সুবাদে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার মেলে।
কিন্তু মানিকচকে তা হয়নি।
বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ‘বর্ডার রোড’ নির্মাণের জন্য ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে লালগোলার মানিকচক পঞ্চায়েত এলাকায় শ’তিনেক লোকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই জমিদাতাদের বাইরে অন্য কিছু লোক নিয়ে ‘ইসি কার্ড’ তৈরির জালিয়াতি চক্র তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি, এমন লোকজনের সন্তানদের নামে ‘ইসি কার্ড’ বের করার চক্র তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। সে কথা মেনেও নিয়েছেন জমি অধিগ্রহণ দফতরের এক জেলা আধিকারিক। শ্যামল পাল নামে ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘এ নিয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।’’
জেলা জমি অধিগ্রহণ দফতরে জমা পড়া ওই অভিযোগ অনুসারে, এই চক্রে ভূমি দফতরেরও কেউ কেউ জড়িত রয়েছেন। বলা হয়েছে, ১৯৯৩-এর পরে অধিগৃহীত জমি তার আগেই অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তর করা হয়েছে দেখিয়ে বেশ কিছু ভুয়ো দলিল করেছেন ভূমি দফতরের এক আধিকারিক। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই আধিকারিক সেই জাল দলিল দেখিয়ে সরকারি খাতায় মালিকানার ‘রেকর্ড’ও নথিভুক্ত করেছেন। এবং সেই রেকর্ড দেখিয়ে নিজের দুই সন্তানের নামে ইসি কার্ড করেছেন। তার সুবাদে দু’জনের মধ্যে এক জন ইতিমধ্যে সরকারি চাকরি করছেন। গত বছর ২৮ জুন ও গত ১ জুন জমা পড়া দু’টি অভিযোগেই অভিযুক্তদের নামধাম দেওয়া আছে। সেই সঙ্গে কী কী ভাবে ইসি কার্ড জালিয়াতি হয়, তা-ও সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা হয়েছে।
এ দিকে কাহারপাড়া গ্রামের দু’টি জমিদাতা পরিবারের দুই সদস্য মহম্মদ ইসমইন ও জালাল শেখের অভিযোগ, বিশ বছর গড়িয়ে গেলেও আজও অনেকেই ইসি কার্ড পাননি।
ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মানিকচকের আলমগির হোসেন ও হায়দার আলি-সহ তিন জন বা তাঁদের বাবা-মায়ের কারও জমি কখনও অধিগ্রহণ হয়নি। তা সত্ত্বেও ওই তিন জনকে ইসি কার্ড দেওয়া হয়েছে। যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, এমন পরিবার পিছু এক জন ইসি কার্ড পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু অভিযোগপত্রে নামধাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এক জমিদাতার তিন সন্তানই ইসি কার্ড পেয়ে গিয়েছেন।
জমি অধিগ্রহণ না হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কী ভাবে ইসি কার্ড পেলেন? শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘এ নিয়ে শুনানির জন্য অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীকে দফতরে ডাকা হয়েছিল। তাঁরা কেউই আসেননি। পরে ফের তাঁদের ডাকা হবে।’’ অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয় পক্ষই আবার দাবি করছে, কোনও দিনই তাদের শুনানির জন্য ডাকা হয়নি। আলমগির হোসেন ও হায়দার আলি আবার বলেন, ‘‘ইসি কার্ড দিয়েছে সরকারি দফতর। কী করে দিয়েছে, তারাই বলতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy