Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

বাঁধ ভেঙে বানভাসি বড়ঞা

পড়শি ঝাড়খণ্ডে নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ফুলে ফেঁপে ওঠা মশানজোড় ও তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ায় বড়ঞায় ময়ূরাক্ষী নদীর বাঁধ ভেঙেছে।

পথ-হারা: ভরতপুরের আঙ্গারপুরে জলের নীচে চলে গিয়েছে কান্দি-সালার রাজ্যসড়ক। বৃহস্পতিবার যাতায়াত করতে হয়েছে এ ভাবেই। ছবি: কৌশিক সাহা 

পথ-হারা: ভরতপুরের আঙ্গারপুরে জলের নীচে চলে গিয়েছে কান্দি-সালার রাজ্যসড়ক। বৃহস্পতিবার যাতায়াত করতে হয়েছে এ ভাবেই। ছবি: কৌশিক সাহা 

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

নিম্নচাপ সরেছে বটে, কিন্তু বর্ষা বিদায় নেয়নি। রয়ে গিয়েছে বৃষ্টির ভ্রূকুটি। আর, সেই আবহে, পড়শি ঝাড়খণ্ডে নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ফুলে ফেঁপে ওঠা মশানজোড় ও তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ায় বড়ঞায় ময়ূরাক্ষী নদীর বাঁধ ভেঙেছে।

প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা জমি। রাস্তা ভেসে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল। কৃষি আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, চাষের জমি জলে ডোবায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। সব মিলিয়ে, বাঁধ ভাঙায় বন্যার আতঙ্কও ছড়িয়েছে।

টানা বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পুজোর আগেই। খাল-বিল-পুকুর-ডোবা এমনিতেই টইটম্বুর ছিল। সোম এবং মঙ্গলবারে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জমিতে খেতে জল জমে। ময়ূরাক্ষীর বাঁধভাঙা স্বাভাবিকভাবেই গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথায় হাত চাষিদের।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’দিনে ঝাড়খণ্ডে অঢেল বৃষ্টি হয়েছে। আর তার জেরে মুর্শিদাবাদ-বীরভূমে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে ময়ূরাক্ষীতে জল বেড়ে গিয়েছে। তিলপাড়া ব্যারাজে জল ছাড়ার ফলে নদীর জল প্রায় বিপদ সীমা ছুঁয়ে ফেলেছে। বুধবার বিকেল থেকে আচমকা নদীর জল বাড়তে থাকায় বড়ঞার বিভিন্ন এলাকায় তাই বানভাসি চেহারা নিয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নজরদারি রয়েছে তাঁদের। বুধবার, ভোররাতে গোদাপাড়া গ্রামের মাঠে ময়ূরাক্ষী নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। জল ঢুকতে শুরু করে আশপাশের ধানি জমি এমনকী গ্রামেও। তবে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ময়ূরাক্ষীর ওই নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করা যায়নি।

গোদাপাড়ার বাসিন্দা ইরসাদ মল্লিক ও সাইরুল শেখরা বলেন, “এ বার ওই বাঁধের কাজ হয়েছিল, কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই তা ভেঙে গেল। বুঝুন তা হলে কী কাজ হচ্ছিল।’’ বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি বদ্যিনাথ দাস। তিনি বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে ওই কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে নদীর জলের ওই বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। আমরা ফের বাঁধটি সংস্কার করার জন্য সেচ দফতরকে জানিয়েছি।”

যদিও ওই বাঁধটি সেচ দফতরের অর্ন্তভূক্ত নয় বলে দাবি করেছেন কান্দি মহকুমা সেচ আধিকারিক দীপক রক্ষীত।তিনি বলেন, “ওই বাঁধটি পঞ্চায়েতের অধীনে। কিন্তু এখন নদীতে জল থাকায় পঞ্চায়েতের পক্ষে ওই কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা যুদ্ধকালীন তৎপরতাই ওই বাঁধটি সংস্কারের কাজ শুরু করছি।”

একই ভাবে ওই নদীর জল কান্দি-সালার রাজ্য সড়কের উপর ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকের উপর দিয়ে বইতে শুরু করায় বুধবার রাত থেকে ওই রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ওই রাস্তা থেকে জলে সরে যেতে ফের যানচলাচল শুরু হলেও তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। সেচদফতর সূত্রে খবর তিলপাড়া জলাধার থেকে বুধবার দুপুর একটায় ৪৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার কারণে ময়ূরাক্ষী নদীতে জল বেড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই জলাধার থেকে মাত্র ১২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে বন্যা হওয়ার কোনও সম্ভবনা নেই বলেই মত সেচ দফতরের কর্তাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Flood situation Kandi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE