প্রতীকী ছবি।
স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের নালিশ জানাতে জঙ্গিপুর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাগরদিঘির বিলকিস তাহমিনা। আদালত থেকে সেই অভিযোগ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল সাগরদিঘি থানায়। অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে এফআইআর না করেই সেই অভিযোগ ফেলে রাখা হয়েছিল থানায়। তার পরে বহু চেষ্টা ও আবেদনের পরে এফআইআর করে পুলিশ।
বছরখানেক আগে বাসুদেবপুরের লতিকা দাসের পরিবারের লোকজন আক্রান্ত হন। ভয়ে তাঁরা শমসেরগঞ্জ থানায় যেতে পারেননি। জঙ্গিপুর আদালতে গিয়ে লতিকা অভিযোগ দায়ের করেন ১৫৬ (৩) ধারায় (আইনজীবীদের একাংশ জানান, দেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ (৩) ধারায় বলা রয়েছে, পুলিশ কোনও অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলে নিম্ন আদালতের বিচারকের (ম্যাজিস্ট্রেট) কাছে সেই অভিযোগ জানানো যায়। বিচারক সেই অভিযোগ পেয়ে তাকে ধর্তব্যযোগ্য মনে করলে পুলিশকে নির্দেশ দেবেন এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে)। আদালতের নির্দেশও যায় থানায়। অভিযোগ, পুলিশ এফআইআর করেনি। মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে এমন আরও নজির রয়েছে।
আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিচারক পুলিশকে এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দিলেও কত ক্ষণ বা কত দিনের মধ্যে এফআইআর দায়ের করতে হবে তা ফৌজদারি বিধিতে লেখা নেই। আইনজীবীদের অভিযোগ, পুলিশের একাংশ আইনের ফাঁকের সুবিধা নিয়ে এফআইআর দায়ের করতে অনেক সময় দেরি করে।
এ বার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির সাম্প্রতিক একটি পর্যবেক্ষণের পরে পুলিশের এই গড়িমসি করার মানসিকতা বন্ধ হবে বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। নিম্ন আদালতের বিচারক কোনও অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে এফআইআর দায়ের করতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে গত ৯ জুলাই রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপার, রেল পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের এমনই বার্তা পাঠানো হয়েছে।
যে মামলার পর্যবেক্ষণের পরে এই বার্তা সেই মামলাটি মালদহের চাঁচল থানার। এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় গত বছরের ১৩ জানুয়ারি সেখানকার নিম্ন আদালতের বিচারক পুলিশকে এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেন। পুলিশ এফআইআর দায়ের করে গত সেপ্টেম্বরে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আগাম জামিনের আবেদন করেন। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আগাম জামিনের মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চে। তখন বিচারপতি বাগচী পর্যবেক্ষণ করেন, পুলিশের উচিত ছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করা।
ফরাক্কার আইনজীবী রবিউল আলম বলছেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই এই ধরনের মামলা আদালত থেকে পাঠানো হলেও তা থানায় ফেলে রাখা হয়। হাইকোর্টের এই বার্তায় বিচারপ্রার্থীরা সুবিচার পাবেন।” জঙ্গিপুরের সরকারি আইনজীবী আফজালউদ্দিন বলছেন, “প্রতিটি থানায় খোঁজ নিলে দেখা যাবে ১০-১৫টি এফআইআর না করে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে মানুষ সময়ে বিচার পাচ্ছে না। হাইকোর্টের এই নির্দেশ বিচারপ্রার্থীদের স্বস্তি দেবে।”
বেশিরভাগ থানার পুলিশ আধিকারিকেরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy