ফাইল চিত্র।
প্রতি বছর বর্ষার পর পেঁয়াজের দামে চোখে জল আসে ক্রেতার। গত কয়েক বছর ধরেই বছরের ওই সময় পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি পার করে দেয়। বর্তমানে সেই পেঁয়াজের দাম কমে তলানিতে ঠেকেছে। অবস্থা এমনই যে, পেঁয়াজ ঘরে তোলার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না চাষি। মাঠ থেকেই কেজি প্রতি সাত-আট টাকায় তাঁরা পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন।
কয়েক দিন ধরে রাজ্য জুড়ে পেঁয়াজের দাম তলানিতে। মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল, বহরমপুর, লালবাগ মহকুমায় ১০-১৫ টাকা কেজি দরে খুচরো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। জঙ্গিপুর, কান্দিতে কয়েক বার হাতবদল হয়ে ১৫-২০ টাকা কেজি দাম পেঁয়াজের। চাষিরা পাচ্ছেন পাঁচ থেকে সাত টাকা কেজিতে। চাষিদের বক্তব্য, সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থা। তাঁদের কথায়, ‘‘ পেঁয়াজ বেশি দিন ঘরে রাখা যায় না। সংরক্ষণের স্থায়ী উপায় না থাকায় খেত থেকে পেঁয়াজ তোলার পর কম দামেই তা বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।’’ বর্ষার পর চাষিদের ঘরে পেঁয়াজ থাকে না। ওই সময়ে বাজারে যা পেঁয়াজ পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই ভিন রাজ্য থেকে বিশেষত মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে আসে৷ নওদার পেঁয়াজ চাষি ওয়াজেল শেখের আক্ষেপ, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুযোগ থাকলে অসময়ে পেঁয়াজ বিক্রি করে কিছুটা লাভ হত। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা তো আজও গড়ে উঠল না।’’ জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। তার অধিকাংশই শীতকালীন পেঁয়াজ। নওদা ব্লকে পেঁয়াজ চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। পাশের হরিহরপাড়া, বেলডাঙা ব্লক, সুতি ১,২ এবং রঘুনাথগঞ্জ ব্লকেও অনেক চাষি পেঁয়াজ চাষ করেন। উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, চাষিদের সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে কাঁচাগোলা তৈরি করে দেওয়া হয়। তবে তাতে বেশিদিন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় না বলে চাষিরা আগ্রহ দেখান না। অনেকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের চেষ্টা করেন। চলতি বছর বীজ, সার, কীটনাশক, ছত্রাকনাশক কিনে চাষ করতে গিয়ে যে টাকা খরচ হয়েছে চাষির, পেঁয়াজ বিক্রি করে তার এক-চতুর্থাংশও উঠছে না বলে দাবি চাষিদের। চাষিদের অভিযোগ, দু’ বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এসে পেঁয়াজ সংরক্ষণে উদ্যোগী হতে বলেছিলেন প্রশাসনের কর্তাদের। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। যদিও রাজ্যের উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আগামী দু’-এক বছরের মধ্যেই জেলার চাষিরা পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy