প্রণব মণ্ডল
পদ্মায় মাছ ধরার সময় বিজিবি আটক করেছিল তিন মৎস্যজীবীকে। তাঁদের মধ্যে দু’জন কোনও রকমে ফিরে এলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত খবর মেলেনি জলঙ্গির শিরচরের বাসিন্দা প্রণব মণ্ডলের। খবর পাওয়ার পরেই স্থানীয় বিএসএফ ক্যাম্পে ছুটে এসেছিলেন প্রণবের স্ত্রী রেখা মণ্ডল। এ দিন তিনি সেখানেই কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘দু’মুঠো খাবারের জন্যই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মায় নামা। কিন্তু সেই পদ্মায় নেমে যদি গুলি খেতে হয়, তার থেকে আধপেটা খেয়ে বেঁচে থাকাও ভাল। প্রয়োজনে ভিক্ষা করব কিন্তু পদ্মায় আর কখনও ওকে (প্রণব) পদ্মায় যেতে দেব না।’’
বিএসএফ জওয়ানদের করজোড়ে তিনি বলছিলেন, ‘‘এ বারের মতো আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনুন। ও না ফিরলে না খেয়ে মরতে হবে আমাদের।’’
পাটকাঠির বেড়া আর টিনের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট দু’টি ঘর। এক ছেলে আর তিন মেয়েকে নিয়ে দিনভর সংসার আগলে রাখেন রেখা। ভোরে কখনও পান্তা খেয়ে, কখনও আবার না খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মৎস্যজীবী প্রণব। ঘরে ফেরেন সেই সন্ধ্যা নাগাদ। কেবলমাত্র পেটের টানে পদ্মার বুকে দিনভর ভেসে ভেসে কিছু মাছ জুটলে মুখে ভাত ওঠে গোটা পরিবারের। আর তাতেই দিনের শেষে হাসি ফোটে প্রণবের মুখেও। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই হাসি আর ফোটেনি। বরং দিনভর একটা অচেনা আতঙ্ক ঘিরে রেখেছে গোটা পরিবারকে।
রেখার দাবি, ‘‘এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতির সামনে আমাদের পড়তে হয়নি। কখনও কখনও ভুল করে ওদেশের জলসীমায় পৌঁছে গেলেও ধমক দিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছে বিজিবি। কিন্তু এ বার কেন ওরা এমনটা করল, বুঝতে পারছি না।’’
ফিরে এসেছেন মৎস্যজীবী বিকাশ মণ্ডল ও অচিন্ত্য মণ্ডল। তাঁদের পরিবারের লোকজনও বলছেন, ‘‘এমনিতেই পদ্মাপাড়ে বারো মাসে বারোশো সমস্যা। তার উপরে এ সব হলে তো না খেয়ে মরতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy