কল্যাণীতে পার্শ্বশিক্ষকদের উপরে এ ভাবেই লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ। ছবি: প্রণব দেবনাথ
সম কাজে সম বেতন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পার্শ্বশিক্ষকদের সহকারী শিক্ষকের মর্যাদার দাবিতে কল্যাণীতে আন্দোলনে বসেছিলেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। আন্দোলনকারীদের হটাতে বেধড়ক লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রচারিত হতে সমাজের বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। সকলেই পুলিশের এই ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপরে পুলিশ যে ভাবে লাঠি চালিয়েছে তা বর্বোরোচিত। অনেকেই চাইছেন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।
রবিবার বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। সেখানে তিনি জানান, তৃণমূল দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষকেরা নানা দাবিতে আন্দোলন করছেন। কোথাও শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন, কোথাও বা অনশন করছেন। তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু আমরা অবাক হয়ে দেখছি তৃণমূল সরকার পুলিশকে দিয়ে বার বার তাঁদের উপর নৃশংস আক্রমণ করছে। কল্যাণীতে পার্শ্বশিক্ষকদের উপর আক্রমণ হল। মহিলাদের উপর শারিরীক ভাবে আক্রমণ করা হল তা বেমানান।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কল্যাণীতে মহিলাদের উপর যে ভাবে আক্রমণ করা হল তা এক ধরনের শ্লীলতাহানি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অধীর বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা সমাজ গড়ার কারিগর। তাঁদের উপর আক্রমণ বন্ধ হোক। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন।’’
কবি দেবদাস আচার্য এর আগেও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় তিনি তাঁর বলিষ্ট মতামত ব্যক্ত করেছেন। এ বারও তিনি চুপ থাকেননি। রবিবার তাঁর সম্মাননা সভার আয়োজন করা হয়েছিল কৃষ্ণনগরে। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত অন্যায়। অত্যন্ত অনুচিত কাজ হয়েছে। বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন কোনও মানুষ এমন ঘটনা মানতে পারবে না। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।”
চুপ করে থাকতে পারেননি লেখক আনসারুদ্দিনও। পার্শ্ব শিক্ষকদের উপরে হামলার ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কার্যত গর্জে উঠেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘খুব অন্যায়। কোনও ভাবেই তা মানা যায় না। একটা ন্যায্য দাবি নিয়ে কিছু শিক্ষক আন্দোলন করছেন। সম কাজে সম বেতন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। রাতে তাঁদের উপরে পুলিশের এই নির্মম লাঠি চালানো অত্যন্ত নিন্দার।’’
রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী সুবীর পাল বলছেন, ‘‘তাঁরা তো শিক্ষক। তাঁদের উপরে এই পুলিশি নির্যাতন মানতে পারছি না। আমার মনে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশকর্মীদের শাস্তি হওয়া উচিত।” গায়ক দেবব্রত মালাকার সরাসরি বলছেন, “শিক্ষকেরা তো সমাজকে শিক্ষিত করেন। তাঁরা মানুষ তৈরির কারিগর। তাঁদের উপরে এই হামলা আসলে গোটা সমাজের লজ্জার। আমরা আজ লজ্জিত।”
গত শুক্রবার সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, সেখানেই পুলিশ তাঁদের যথেষ্ট হেনস্থা করে। শনিবার কল্যাণীতে মেন স্টেশন সংলগ্ন বাস টার্মিনাসে তাঁরা অবস্থানে বসেন। সন্ধ্যায় পুলিশের তরফে বলা হয় বাসস্ট্যান্ড ছেড়ে সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে গিয়ে অবস্থান করতে। পার্শ্বশিক্ষকেরা তাতে রাজি হননি। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে। মহিলাদের রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। কয়েক জন মহিলা শিশু কোলে এসেছিলেন। রেয়াত করা হয়নি তাঁদেরকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy