Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Drug Smuggling

ফের মাদকের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, তাঁরা প্রতিনিয়ত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছেন। মাদক উদ্ধার করা হচ্ছে, মাদক কারবারিদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে।

মাদকদ্রব্যের বাড়বাড়ন্ত।

মাদকদ্রব্যের বাড়বাড়ন্ত। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৪
Share: Save:

এক সময় মাদকের স্বর্গ রাজ্য হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদ। বিশেষত বাংলাদেশ সীমান্তের জনপদ লালগোলাকে কেন্দ্র করে হেরোইন-সহ নানা ধরনের মাদকের কারবার রমরমিয়ে চলত। তবে বছর দশেক আগে মাদকের উপরে রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছিল পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি একের পর এক মাদক উদ্ধার এবং বহরমপুরে অধিকাংশ চুরির পিছনে মাদকের নেশা করা লোকজন থাকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কী মাদকের কারবার নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে? তা না হলে কী করে এত মাদক জেলায় কোথায় থেকে আসছে সেই প্রশ্নও উঠেছে।

তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, তাঁরা প্রতিনিয়ত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছেন। মাদক উদ্ধার করা হচ্ছে, মাদক কারবারিদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। তবে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘মাদকের নেশার বিরুদ্ধে আমরা বাসিন্দাদের সচেতন করি, আবার মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করি। পুজোর কারণে এতদিন আমরা ব্যস্ত ছিলাম। ফের নেশামুক্তি কেন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নেশামুক্ত জেলা গড়তে সচেতনতামূলক কর্মসূচি করব।’’

জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মূলত হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট, কাশির সিরাপের মতো মাদক বাংলাদেশে পাচার হয়। তবে বর্তমানে হেরোইন, কাশির সিরাপ ও গাঁজা পাচার বেশি হচ্ছে। তবে পুলিশের দাবি, তাঁরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অক্টোবর মাস জুড়ে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, রানিনগর, সাগরপাড়া, কান্দি, নওদা, লালগোলা সহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মাদকও। গত মঙ্গলবারও বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া লালগোলা থেকে ২৭২ গ্রাম মাদক-সহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদক কারবার রুখতে জেলা পুলিশও লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। যার জেরে অনেক মাদক কারবারি গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি হয়েছে।

বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রের খবর, এই মূহূর্তে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ১৯০০ জন বন্দি রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় পাঁচশো বন্দি মাদক মামলায় অভিযুক্ত। বহরমপুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মাদক মামলায় অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি অল্প সময়ে টাকা রোজগারের লোভে অনেকেই মাদক পাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছে। একটি ব্যাগ ভর্তি মাদক এপার থেকে ওপারে (বাংলাদেশে) চালান করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে নগদ ৩০০ টাকা পেয়ে যাচ্ছে।’’

তবে তার জন্য মাদক নিয়ে আসতে হবে। কোন পথ ধরে এত মাদক মুর্শিদাবাদে পৌঁছচ্ছে, সে প্রশ্ন জেলা পুলিশকে ভাবাচ্ছে। সম্ভাব্য সমস্ত ‘রুট’-ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্প্রতি মাদক উদ্ধার

৮ অক্টোবর- রানিনগর থানার পুলিশ ২৫৫ বোতল কাশির সিরাপ-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

১১ অক্টোবর- সাগরপাড়া থানার পুলিশ ২৭০ বোতল কাশির সিরাপ-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

১৬ অক্টোবর- রানিনগর থানার পুলিশ ১৬০ বোতল কাশির সিরাপ-সহ এক জনকে গ্রেফতার করেছে।

২২ অক্টোবর- বহরমপুর থানার পুলিশ ১০৮ কেজি গাঁজা-সহ এক জনকে গ্রেফতার।

২৪ অক্টোবর- ৪৪৯ বোতল কাশির সিরাপ-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে রানিনগর থানার পুলিশ।

২৫ অক্টোবর- ৩৮৫ বোতল কাশির সিরাপ-সহ এক জনকে গ্রেফতার করেছে রানিনগর থানার পুলিশ।

২৫ অক্টোবর- ১০ হাজার বোতল কাশির সিরাপ-সহ দু’জনকে নওদা থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

২৬ অক্টোবর- ৩২০০ বোতল কাশির সিরাপ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে কান্দির পুলিশ।

৬ নভেম্বর- লালগোলা থানার পুলিশ ২৭২ গ্রাম হেরোইন-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Drug police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE