শীত বেলার পুতুলপট্টির চেনা ছবিটাই যেন বেমালুম হারিয়ে গিয়েছে। সৌজন্যে নোট বাতিল। ভরা ভ্রমণ মরসুমে ক্রেতাদের পা পড়ছে না কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির পুতুলপট্টিতে।
অথচ অন্য বছরের সঙ্গে পুতুলপট্টিতে আয়োজনে কোনও ঘাটতি নেই। মডেল থেকে শুরু করে মাটির হাজারো সম্ভার শোভা পাচ্ছে দোকানের চকচকে শো-কেসে। কিন্তু, ডিসেম্বরের শুরুতে ক্রেতা কই?
ঘূর্ণীর খ্যাতনামা মৃৎশিল্পী সঞ্জয় সরকার বলছেন, “ডিসেম্বর এসে গেল অথচ বিক্রিবাটা নেই। এণন অবস্থা আগে কখনও দেখিনি।” এখানকার পুতুলপট্টিতে প্রায় ৪০টি স্টল আছে। দুনিয়া জুড়ে মাটির পুতুল এবং অন্যান্য মাটির ভাস্কর্যের খ্যাতি এই পুতুলপট্টির। বীরেন পাল, সুবীর পাল, কার্তিক পাল, গনেশ পাল, তড়িৎ পাল, মৃগাঙ্ক পাল, শম্ভু পাল, মুক্তি পাল, সঞ্জয় পালদের মত সব দিকপাল শিল্পীদের নাম জড়িয়ে রয়েছে স্টলগুলির সঙ্গে।
শীত পড়তে না পড়তেই বাস করে স্কুলের পড়ুয়া থেকে শুরু করে উইকএন্ডে বেড়াতে আসা বহু মানুষ পুতুলপট্টিতে ভিড় জমান। এবার পুতুলপাড়া যেন ঘুমিয়ে রয়েছে। শিল্পী প্রদীপ পাল বললেন, “মানুয তো শখ মেটাতে এ সব কেনে। এখন সংসারের প্রয়োজনীয় টাকা যোগাড় করতেই তাঁদের গলদঘর্ম হচ্ছে।’’ তিনি জানালেন, যাও বা দু’-এক জন আসছেন, তাদের হাতেও ২০০০ টাকার নোট। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘অত বড় নোট ভাঙিয়ে দেব কী করে?’’
রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুবীর পাল আবার শোনাচ্ছেন অন্য় সমস্যার কথা। তিনি জানালেন, মূর্তির বায়না হচ্ছে চেকে। ব্যাঙ্ক থেকে সেই টাকা তোলা যাচ্ছে না। ফলে কারিগরদের মজুরী মেটানো যাচ্ছে না। কেনা যাচ্ছে না কাঁচা মালও। এই মরসুমে ভাল বেচাকেনা হয় বলে অধিকাংশ স্টলেই প্রচুর তৈরি পুতুল মজুত। কারিগরদেরও পাওনা মেটানো যাচ্ছে না। ফলে ছোটখাটো কারিগররা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ রকম যে কতদিন চলবে তা কেউ জানে না। ফলে মুষড়ে পড়া পুতুলপাড়া সুদিনের অপেক্ষায় দিন গুনছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy