—প্রতীকী চিত্র।
এ বার কি রুট বদল করল সীমান্তে সোনা পাচারকারিরা? এমনকি বহু ক্ষেত্রে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে সীমান্ত পেরিয়ে যাত্রিবাহী বাসে চেপে সোনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনায়।
উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তে বিএসএফের হাতে একের পর এক পাচারকারি ধরা পড়ায় পাচারের এই রুট বদল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত তিন দিনে মুর্শিদাবাদ ও লাগোয়া নদিয়ার সীমান্তে ১৪.৩০ কিলোগ্রাম সোনা আটক করেছে বিএসএফ। টাকার অঙ্কে এই সোনার মূল্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। এই তিন দিনে গ্রেফতার হয়েছে ৮ জন পাচারকারি।
একে তো বিয়ের ভরা মরসুম, তার উপরে সোনার চড়া দাম ভারতে।বিএসএফের মতে, সেই কারণেই সোনা পাচার বেড়েছে গ্রামীণ রুট ধরে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সোনার দাম ভারতীয় টাকায় ৫২ হাজার টাকার আশপাশে। কলকাতায় সেই সোনার দাম ৭৩ হাজার টাকার উপরে।স্বভাবতই বাড়তি টাকার লোভেই মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া দুই জেলার সীমান্ত পথ ব্যবহার করে সোনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতায়।
২০২৩ সালে এক বছরে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে ১৫৩ কিলোগ্রাম সোনা আটক হয়েছিল। কিন্তু তিন দিনে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে ১৪.৩ কিলো সোনা আটক এই প্রথম।
৪ জুলাই রাতে নদিয়ার সীমানগরের ১১ নম্বর রাজ্য সড়কে যানবাহনে পরপর ৪টি অভিযান চালায় বিএসএফ। ৭ জন চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করে মিলেছে ৯.৫৭২ কিলো সোনা। সেই সঙ্গে নগদ ১১.৫৮ টাকা।
এ দিন ভোরে ওই সড়কে একটি গাড়ি থামানো হয়। ৪.৮ কিলো সোনাসহ দুই পাচারকারিকে আটক করা হয়। ওই সড়কে ঘণ্টা দেড়েক পরে আর একটি বাসে অভিযান চলে। ১.২ কেজি সোনা সহ ১ জনকে আটক করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আরেকটি বাস থামিয়ে তল্লাশিতে মেলে ৩.৬২ কিলো সোনা। ৩ জনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এরপর করিমপুরের রামনগর গ্রামে একটি বাড়িতে হানা দেয় বিএসএফ। সেখানে মেলে ১টি সোনার বিস্কুট ও ১১,৫৮,৫০০ টাকা নগদ। ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ৭ জনই নদিয়া জেলার বাসিন্দা।
ধৃতদের মধ্যে রফিক মণ্ডল দীর্ঘ দিন ধরে সোনা চোরাচালানের সাথে জড়িত। এ দিন সে কৃষ্ণনগরে এক ব্যক্তির কাছে এই সোনা পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল, যার মজুরি বাবদ ৩ হাজার টাকা পেত সে। এর আগে ২০২২ সালেও ১৬টি সোনার বিস্কুট সহ বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে সে।
অন্যরা করিমপুরের সীমান্ত এলাকা থেকে সোনা নিয়ে দমদম রেলস্টেশনে কয়েকজন ব্যক্তির হাতে সোনা তুলে দিতে যাচ্ছিল। এর জন্য তারা পেত ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।
পরদিন ৫ জুলাই বিএসএফ মথুরাপুর গ্রামে অতর্কিত হানা দেয়। এক ব্যক্তি ঠাকুরী গ্রাম থেকে একটি স্কুটিতে করে মথুরাপুর গ্রামের দিকে আসছিল। তাকে আটক করে সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়ে যায় বিএসএফ। স্কুটি তল্লাশি করে স্কুটির সিটের নীচে রাখা লাগেজ থেকে ২০টি সোনার বিস্কুট ও ২টি সোনার ইট উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৪.৭ কিলো। ধৃত জানায়, সোনা সে বনগাঁয় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল।
দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের বিএসএফের জনসংযোগ আধিকারিক এ কে আর্য বিএসএফ জওয়ানদের তিন দিনের সফল অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সোনার চোরাচালানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হয়েছে। সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত যে কোনও তথ্য জানাতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর মানুষজনকে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy