Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
জরুরি বৈঠক প্রশাসনের

ডেঙ্গির সংখ্যা বাড়ল ৭ মাসে

গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নদিয়ায় ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০৮১৩ জন। তার মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ৬৭। কেউ মারা যাননি বলে দাবি স্বাস্থ্য ভবনের। চলতি বছর প্রথম সাত মাসে জেলায় ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছেন ১২৪ জন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সন্দীপ পাল
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

ডেঙ্গির মধ্যেই জুজু দেখছেন নদিয়ার স্বাস্থ্যকর্তারা।

এমনিতেই ডেঙ্গি নিয়ে এখন স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যের বিরুদ্ধে ডেঙ্গি আক্রান্ত ও মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা গোপনের অভিযোগ এনেছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবিলায় মরিয়া স্বাস্থ্য কর্তারা। কিন্তু জেলায় ডেঙ্গি কমার বদলে গত বছরকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে।

গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নদিয়ায় ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০৮১৩ জন। তার মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ৬৭। কেউ মারা যাননি বলে দাবি স্বাস্থ্য ভবনের। চলতি বছর প্রথম সাত মাসে জেলায় ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছেন ১২৪ জন। অর্থাৎ, গত বছরের প্রথম সাত মাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুন মানুষ। ফলে, বছরের শেষে আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা। কল্যাণী ও চাকদহ ও হরিণঘাটা পুরসভার পাশাপাশি চাকদহ, কালীগঞ্জ ব্লকের গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি চাপে রেখেছে স্বাস্থ্যভবনকে।

এরই মধ্যে গত সপ্তাহেই নাকাশিপাড়ায় এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। চলতি বছর নাকাশিপাড়ায় ডেঙ্গির এটাই প্রথম কেস। এই নাকাশিপাড়ায় গত বছর মারাত্মক আকার নিয়েছিল ডেঙ্গি। আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০৯ জন। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন জেলা ও ব্লক স্বাস্থ্যকর্তারা নাকাশিপাড়ায় ওই আক্রান্তের পাড়ায় ছুটে গিয়েছেন। পরিবারের বাকিদের ও আশপাশের বাড়ির লোকেদের রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে। মশানিধন অভিযানও শুরু হয়েছে।

তবে তাতেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না প্রশাসন। একাধিক স্বাস্থ্যকর্তা এবং চিকিৎসক জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ডেঙ্গি আক্রান্ত ক্রমশ বাড়ছে। মুখে অবশ্য প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যুক্তি দিচ্ছে, সচেতনতা বাড়ায় মানুষ জ্বর হলে বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা করাচ্ছেন। তাতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় এবং জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত—দু’জনেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার কারণ হিসেবে এই সচেতনতা বাড়ার দাবি করেছেন। তবে আড়ালে প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, মানুষ বেশি পরীক্ষা করাচ্ছে বলে আক্রান্ত বাড়ছে—এই তত্ত্ব সাজিয়ে আসলে প্রকৃত পরিস্থিতি ঢাকাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

তা বুঝেই সোমবার তড়িঘড়ি ডেঙ্গি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যস্বাস্থ আধিকারিক। ঠিক হয়েছে, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নজরদারি চালানোর জন্য ভিলেজ রিসোর্স পার্সেনদের সঙ্গে কাজ করবেন অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মীরা। তাঁরা দু’মাসে অন্তত দু’বার বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা করবেন। মশা মারা, জমা জল সাফ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় ক্লাবগুলিকে। স্কুলে ক্লাস শুরুর আগে অন্তত কয়েক মিনিট ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা করবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই সঙ্গে জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সই করা ছাপানো আবেদনপত্র প্রতিটা বাড়িতে বিলি করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Mosquito
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy