হাজারদুয়ারি।—নিজস্ব চিত্র।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস মিলিয়ে বুধবার সকাল থেকে যে মেঘ কালো করে ঢেকেছিল জেলার আকাশ, রাতে সেই অন্ধকার আকাশই প্রবল বৃষ্টি হয়ে ভাসিয়ে দিল মুর্শিদাবাদ। সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। এ খবর লেখা পর্যন্ত যা ক্রমশ বাড়তে থাকল।
আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, আমপানের গতিপথ বদলে গিয়েছে। অধিকা শেষ রাতে তা নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার উপরে আরও প্রবল ভাবে জাঁপিয়ে পড়তে পারে।
তবে এ দিন বিকেল থেকে বৃষ্টির বিরাম নেই। জেলার প্রায় সর্বত্রই ঘোর বর্ষণের ফলে অজস্র কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর যেমন মিলেছে, তেমনই ক্ষতি হয়েছে ফলনের। ঝরে পড়েছে আম-লিচু। আগামী ৪৮ গণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জেলার সব ফেরিঘাট। এই পরিস্থিতিতে ঘর ছেড়ে মানুষজনকে বেরতে নিষেধ করার পাশাপাশি নদীতে মাছ ধরার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। বুধবার সকাল থেকেই মাইকে ব্লক প্রশাসন নাগাড়ে ঘোষণা করে চলেছে আগাম সতর্কতা ঘোষণা করেছে। জেলা সদরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম, নম্বর ০৩৪৮২-২৫০১৩৫। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘ঝড়ের গতিপ্রকৃতির দিকে আমরা নজর রেখেছি। উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর রাজ্যে সমুদ্র উপকূলে আছড়ে পড়ার পরে আমপান নদিয়া-মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী-খুলনার দিকে যেতে পারে। ফলে ঝড়ের প্রকোপে ক্ষতির সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়তে পারে। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য জেলা, মহকুমা, ব্লক, পঞ্চায়েত স্তরে দল তৈরি করে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে মজুত করা হয়েছে ত্রাণ। জেলার বেশ কিছু এলাকা থেকে গ্রামবাসীদের সরানো হয়েছে ফ্লাড শেল্টারগুলিতে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল ফরাক্কা— সর্বত্রই প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। এ দিন ওই বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন। সেখানে ফরাক্কার গঙ্গায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে লাগোয়া শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ান পুর এলাকাকেও। জেলা মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা অমলেন্দু বর্মন বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে আমরা আগেই মৎস্যজীবিদের সতর্ক করেছি। নদী বা বড় জলাশয়ে যেন নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে না নামেন কেউ, সে বিষয়ে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৮৮হাজার হেক্টর জমিতে ধান লাগানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে ৪৫ শতাংশ ধান মাঠ থেকে তোলা হয়েছে। বাকি ৫৫ শতাংশ জমির ধান মাঠে থেকে গিয়েছে। পাট চাষ হয়েছে ১.৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে, তিল ২১ হাজার হেক্টর, আনাজ চাষ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ হেক্টর জমিতে। আমবাগান ২১ হাজার হেক্টর ও লিচু বাগান ৩৮০০ হেক্টর জমিতে রয়েছে। ঝড়ের জেরে ধান, মাচায় থাকা ফসল, আম লিচুর উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুণ্ডু বলেন, ‘‘জেলা দফতরের পাশাপাশি ব্লক কৃষি দফতরেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy