জঙ্গিপুর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের হাল। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
গত দশ বছরে এমন দুর্ভোগে কখনও পড়েনি জঙ্গিপুর। এই মুহূর্তে রক্ত শূন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। এক সপ্তাহ থেকে মহকুমার প্রায় ৪০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রক্তদান শিবির বন্ধ করে দেওয়ার ফলেই এই সঙ্কট। সঙ্কট মোকাবিলায় জঙ্গিপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মী ও পুলিশকর্মীদের রক্ত দানের আবেদন করে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাতে সঙ্কট মেটার আশা ক্ষীণ।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির অভিযোগ, ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মিথ্যে অভিযোগে ৬ জন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয় গত মঙ্গলবার। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বক্তব্য না শুনেই হাসপাতালের সুপার সহ অন্যান্যরা সেই চিকিৎসকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিনা দোষে জেল খাটতে হয়েছে যাদের, তারাই হাসপাতালে প্রতিদিন রক্তদানে সাহায্য করেন।
৬৩২ শয্যার জঙ্গিপুর মহকুমা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই মুহূর্তে ভর্তি ছ’শোরও বেশি রোগী। প্রতি দিন ৩০ থেকে ৩৫ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। মাসে গড়ে প্রায় ৪০০ ইউনিট। দাবি, তার অধিকাংশই জোগান দেয় এই সব স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংস্থাগুলি। মঙ্গলবার থেকে সব রক্তদান শিবির স্থগিত রেখেছে তারা। দাবি, তার প্রতিবাদেই জঙ্গিপুর মহকুমা জুড়ে দেখা দিয়েছে এই চরম রক্ত সঙ্কট।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, “এক প্রসূতিকে নিয়ে এক চিকিৎসকের অমানবিক আচরণে এই ঘটনার শুরু। সে দিন দুপুর থেকে প্রসূতি যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন জানানো সত্ত্বেও সময়ে হাসপাতালে আসেননি তিনি। সন্ধ্যার সময় তিনি হাসপাতালে এলে তাঁকে যন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়ার কথা জানিয়ে সিজার করতে আবেদন করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েক জন কর্তা ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু সে দিন প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন ওই চিকিৎসক। ৪ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসতে বাধ্য করাও হয়েছে। এটা মানবিক আচরণ নয়।”
শুভঙ্করের অভিযোগ, “মঙ্গলবার তার প্রতিবাদ করতে ওই চিকিৎসককে হাসপাতালে না পেয়ে তাঁর প্রাইভেট চেম্বারে যান ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। সেখানে কী ঘটেছে তার ভিডিয়ো রয়েছে। ওই চিকিৎসক পুলিশের কাছে নালিশ করতেই পারেন। আমরা আইনের পথেই তার বিরুদ্ধে লড়ব। তবে আপাতত শিবির নয়, সরাসরি রোগীকে রক্ত দেব।”
জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার বলেন, “যা ঘটেছে তা সরকারি হাসপাতালের বাইরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের কিছুই ঘটেনি। তা সত্ত্বেও রক্তদান শিবির বন্ধ করে পরিষেবাকে অচল করে দেওয়া ঠিক হয়নি। তাঁদের সঙ্গে আমরা আলোচনা চাই। রক্ত নিয়ে এ ভাবে অচলাবস্থায় ক্ষতি হবে স্থানীয় মানুষেরই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy