প্রতীকী ছবি
বিরোধিতার পাল্টা বিরোধিতা!
বাম আমলে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে ‘ট্রাক অ্যান্ড ফিল্ড’ তৈরির পরিকল্পনার বিরোধিতা করে তা আটকে দিয়েছিল সেই সময় বিরোধী পক্ষে থাকা তৃণমূল। এ বার সেই মাঠে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার ব্যাপারে তৃণমূলের গৃহীত পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে আসরে নেমেছে এখন বিরোধী পক্ষে থাকা সিপিএম। তৃণমূল তাদের আপত্তির জন্য সবুজ নষ্ট এবং কলেজের উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। আর এ বার বামফ্রন্ট তাদের বাধার কারণ হিসেবে পরিবেশ হননের যুক্তিই দিচ্ছে।
২০০৮-৯ সাল নাগাদ কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে একটি ‘ট্রাক অ্যান্ড ফিল্ড’ তৈরির পরিকল্পনা নেয় সিপিএম। এর বিরোধিতা করে আন্দোলন শুরু করেন তৃণমূল নেতারা। তাতে শহরের অনেকে যোগ দেন। শেষ পর্যন্ত সেই প্রকল্প মাঝ পথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন। সে দিনের সেই হার দগদগে ঘায়ের মত হয়ে আছে বলেই সিপিএম এ বার প্রায় একই যুক্তিতে তৃণমূলের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে নেমেছে বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। আন্দোলন শুরু করেছে তারাও। শুক্রবার কৃষ্ণনগর শহরে এসে কলেজের মাঠ ঘুরে দেখেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানিয়ে যান, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই জমি তাঁর পছন্দ হয়েছে। এখন শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা।
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এস এম সাদি বলছেন, “এই মাঠে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে পরিবেশের উপরে অসম্ভব নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই মাঠ শহরের ফুসফুস। তা ছাড়া এই মাঠে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হতে পারবে না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় হোক। তবে সেটা অন্য জায়গায়।”
সত্যিই এই কারণের যৌক্তিকতা রয়েছে, নাকি শুধু বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা? এস এস সাদি বলেন, “ওরা সঙ্কীর্ণ রাজনীতির জন্য বিরোধিতা করেছিল। আমরা তা করি না।” একই সঙ্গে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক খগেন্দ্রকুমার দত্ত বলছেন, “আমরা ঠিক যে জায়গা থেকে ট্রাক অ্যান্ড ফিল্ডের বিরোধিতা করেছিলাম আজও সেই জায়গা থেকেই আপত্তি জানাচ্ছি। আমরা বরাবরই চেয়েছি যে এই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হোক। কিন্তু সেটা পরিবেশের কোনও ক্ষতি না-করে।” তিনি জানান ২৭ ডিসেম্বর তাঁরা বৈঠকে বসছেন। সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হবে। যদিও এ সব আপত্তিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, “ভাল লাগছে যে, সিপিএম মহেঞ্জদাড়োর ধ্বংসাবশেষ থেকে বেরিয়ে এসেছে। মাঠ বাঁচানোর বদলে নিজেদের দল বাঁচানোয় মন দিক।” তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় শহরের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি। যারা এর বিরোধিতা করবে তারা মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া এই জমিতেই বিশ্ববিদ্যালয় হবে কিনা সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সেই সিদ্ধান্ত নেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy