Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Farakka Rape and Murder Case

ফরাক্কার বালিকাকে ধর্ষণ ও খুনেও দু’মাসে বিচার শেষ! এক জনের ফাঁসি, এক জনের যাবজ্জীবন

মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দু’মাসের মধ্যে বিচার শেষ করে বৃহস্পতিবারই দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল জঙ্গিপুর আদালত। শুক্রবার রায় ঘোষণাও হয়ে গেল।

Court sentenced a convict to death in connection with the rape and murder of a girl in Farakka

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৬
Share: Save:

মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দু’মাসের মধ্যে বিচার শেষ করে বৃহস্পতিবারই দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল জঙ্গিপুর আদালত। শুক্রবার রায় ঘোষণাও হয়ে গেল। এক জনের ফাঁসি হয়েছে। অন্য জনের যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দু’মাসের মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষীকে ফাঁসির সাজা কয়েক দিন আগেই শুনিয়েছিল বারুইপুর আদালত। আরজি করের মামলা (সিবিআই তদন্ত করছে) যেখানে এখনও বিচারাধীন, সেখানে রাজ্য পুলিশের দ্রুত তদন্তের ফলে জয়নগরকাণ্ডের বিচার মাত্র দু’মাসে হওয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিশও নিজেদের ‘সাফল্য’ জনসমক্ষে তুলে ধরেছিল। একই চিত্র দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কাকাণ্ডেও। সেখানেও নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার বিচার এল মাত্র দু’মাসে। বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্ত দীনবন্ধু হালদার এবং শুভজিৎ হালদারকে দোষী সাব্যস্ত করে শুক্রবার রায় ঘোষণা করল জঙ্গিপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। দীনবন্ধুর ফাঁসির সাজা হয়েছে। আর শুভর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ঘটনাচক্রে, ফরাক্কার ঘটনাও ঘটেছিল আরজি কর আন্দোলনের আবহে, গত অক্টোবর মাসেই।

ফরাক্কাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনকে ফের অভিনন্দনবার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আগেও বলেছি, আবার বলছি। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত। ফাঁসির সাজা। সুষ্ঠু ভাবে সময়ের মধ্যে তদন্ত করতে শাস্তির ব্যবস্থা করা আসলে সেই সব অপরাধীদেরই বার্তা দেওয়া যে, এই অপরাধ সহ্য করা হবে না।’’ প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডেও অপরাধীর ফাঁসির দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

গত বিজয়া দশমীর সকালে দাদুর বাড়িতে ঘুরতে এসে খুন হয়েছিল ওই নাবালিকা। এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে তার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়েছিল। মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে সেই সময় অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। তদন্তে নেমে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী দীনবন্ধু হালদার এবং তাঁর বন্ধু শুভজিৎ হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছিলেন, ফুল দেওয়ার নাম করে নাবালিকাকে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন দীনবন্ধু। সেখানে তিনি এবং শুভজিৎ মিলে নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালান। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের ইঙ্গিত মিলেছিল। পাশাপাশি, নির্যাতিতার শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গিয়েছিল। ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছে, মেঝেতে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছিল নির্যাতিতাকে। তার গলার হাড়ও ভেঙে গিয়েছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকাকে খুনে ব্যবহৃত কাপড়ের টুকরো, তার পরনের রক্তমাখা পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল হাতের ছাপ। দীনবন্ধুর বাড়ির কলপাড়ে দু’টি সিগারেটের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারীরা। ফরেন্সিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ওই সিগারেট দু’টিতে গাঁজা ভরে খেয়েছিলেন দুই অভিযুক্ত। ওই সিগারেটের নমুনার সঙ্গে নাবালিকার পোশাকে লেগে থাকা বীর্যের নমুনা মিলে গিয়েছিল। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে যা গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসাবে আদালতে গ্রহণযোগ্য হয়।

সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অপরাধের নৃশংসতা বিচার করে আমি দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছিলাম। দীনু হালদারকে মৃত্যুদণ্ড ও অন্য আসামিকে আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rape and Murder farakka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy