প্রতীকী ছবি
বিষাক্ত হয়ে ওঠা চোলাই খেয়ে বেশ কয়েক জন প্রাণ হারিয়েছিলেন শান্তিপুরে। বছর দেড়েক আগে ঘটা সেই ঘটনার স্মৃতি আজও তাজা। এর পর পুলিশ ও আবগারি দফতর লাগাতার অভিযান চালিয়ে জেলায় চোলাইয়ের বহু ঠেক ধ্বংস করে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে ফের ফিরে এসেছে চোলাই।
লকডাউনের জেরে বেশ কয়েক দিন ধরে দেশি ও বিদেশি মদের সব দোকান বন্ধ। মদ তৈরির কারখানাগুলিও বন্ধ বলে আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এই সুযোগে কল্যাণীর বিভিন্ন জায়গায় মদের কালোবাজারি শুরু হয়েছে বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। দেশি ও বিদেশি মদ অন্তত চার গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা অত টাকা দিয়ে সেই মদ কিনতে না পারায় ফের সস্তার চোলাই ফিরে এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণীর চরের এলাকা, চর যদুবাটিতে রমরম করে চলছে চোলাইয়ের ব্যবসা। কেউ কেউ বালির ভিতরে চোলাই লুকিয়ে রেখে ব্যবসা চালাচ্ছেন। গেলেই সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতাকে রীতিমতো যাচাই করে তবেই চোলাই বিক্রি করা হচ্ছে।
এক ক্রেতা বলেন, ‘‘বেঁটেখাটো চেহারার ওই যুবক প্রথমে চোলাই দিতে চাইছিল না। পরে বালির ভিতর থেকে তা বার করে দেয়। এক প্যাকেট চোলাইয়ের জন্য সে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। অন্য সময় যার দাম মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকা।’’ এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এলাকায় রমরমিয়ে চলছে চোলাইয়ের ব্যবসা। এক যুবক চোলাই বানানোর মূল উপাদান খুব ভোরে হুগলি থেকে নিয়ে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে কমবয়সিদের এই কাজে লাগানো হয়, যাতে রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের সন্দেহ না হয়।
এক চোলাই কারবারি জানান, চোলাইয়ের ক্ষেত্রে ‘ফাস্ট-কাট’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই ফাস্ট কাট আসে হুগলি থেকে। হুগলির ফাস্টকাট নিয়ে আসেন যদুবাটির এক যুবক। তারপর তিনি এলাকার বহু চোলাই কারবারির কাছে তা বিক্রি করেন। এরপর কারবারিরা গরম জলের সঙ্গে পরিমাণ মতো ফাস্টকাট মিশিয়ে তৈরি করেন চোলাই। প্লাস্টিকের প্যাকেটে সেই চোলাই এখন বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চোলাইয়ের ক্রেতা মূলত চরের গ্রামগুলির বাসিন্দারা। এ ছাড়াও কল্যাণী শহরেরও অনেক গরিব মানুষই চোলাই খান। শনিবার বেলার দিকে আবগারি দফতরের আধিকারিকেরা খোলা বাজারের মদ, বিশেষ করে চোলাই কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে প্রচার চালান। তবে ওই প্রচার সেরে তাঁরা এলাকা ছাড়ার পরেই এলাকার সব চোলাই বিক্রেতা এক সঙ্গে মিলে এলাকারই এক জায়গায় ঝোপের মধ্যে ব্যাগভর্তি চোলাই লুকিয়ে রাখেন।
এক চোলাই বিক্রেতা বলেন, ‘‘এখন প্রচুর দাম মিলছে। ফলে আবগারি দফতরকে লুকিয়ে এ কাজ তো হবেই।’’ আবগারি দফতরের কর্তারা জানান, এরপর ওই এলাকায় ঘন ঘন অভিযান চালানো হবে। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হবে। যাতে ওই কারবার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy