Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ডাক্তার নেই পাঁচ বছর, রোগ হলে ভরসা ফার্মাসিস্ট

করোনার ছায়া পড়েছে গাঁয়ের গভীরেও। নিভু নিভু গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সামনেও ভয়ার্ত মানুষের আঁকাবাঁকা লাইন। কেমন আছে সেই সব অচেনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি, খোঁজ নিল আনন্দবাজারস্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় পাঁচ বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক নেই। তা-ও প্রতিদিন আশপাশের গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য হাজির হচ্ছেন।

লাইন পড়েছে রোগীদের। নিজস্ব চিত্র

লাইন পড়েছে রোগীদের। নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৩:০২
Share: Save:

বছর কয়েক আগেও ওই দৃশ্য চোখে পড়ত প্রায়ই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ডাক্তার দেখাতে দীর্ঘ লাইন। এক সময় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থাও ছিল। রোগীর বাড়ির লোকজনের ভিড়ে সব সময় গমগম করত ইসলামপুর থানার হেরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখন সেদিন গিয়েছে। রোগী ভর্তি বন্ধ অনেক দিন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আউটডোর পরিষেবাও চলছে টিমটিম করে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় পাঁচ বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক নেই। তা-ও প্রতিদিন আশপাশের গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য হাজির হচ্ছেন। চিকিৎসক না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালাচ্ছেন একজন ফার্মাসিস্ট ও এক নার্স। চিকিৎসক না থাকলেও গত কয়েক দিনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর চাপ বেড়েছে। তার কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা দেখে অপেক্ষাকৃত সচ্ছল গ্রামবাসীরা কিছু দিন আগেও চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে চলে যেতেন। তবে গত এক মাস ধরে লকডাউন চলায় গণপরিবহণ স্তব্ধ। ফলে তাঁরাই এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় করছেন। ইসলামপুর থানার হেরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আপাতত প্রায় ১৮টি গ্রামের মানুষের ‘ভরসা’ হয়ে উঠেছেন এখন ওই ফার্মাসিস্ট ও নার্স। সূত্রের খবর, বর্তমানে প্রতিদিন একশো থেকে দেড়শো রোগী আসছনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ফার্মাসিস্ট মোদাসসের হোসেন ও নার্স পরভিন ববি সরকার তাঁদের সাধ্যমতো চিকিৎসা করছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, হেরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা করা হত এক সময়। ধীরে ধীরে সেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। একটা সময় প্রায় এক বছর কার্যত কোনও চিকিৎসাই হত না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তবে মোদাসসের ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পর ধীরে ধীরে পরিষেবা শুরু হয়। পরে কাজে যোগ দেন পরভিন। জালালউদ্দিন মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসীর আক্ষেপ, ‘‘আমরা এখন চিকিৎসকের কথা ভুলে গিয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মীদেরই চিকিৎসক মনে হয়। ওঁরা দু’জন গ্রামবাসীদের রোগের কথা জেনে ওষুধ দেন।’’

অভিযোগ, খাতায়-কলমে হেরামপুর এখনও ১০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সে জন্য পরিকাঠামোও পুরোপুরি তৈরি। কিন্তু শুধু চিকিৎসকের অভাবেই ধুঁকছে সেটি। মোদাসসের বলেন, ‘‘চিকিৎসক নেই বলে তো আর অসহায় গ্রামবাসীদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। বছর তিনেক ধরে এ ভাবেই পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ রানিনগর-১ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশোভন সাহা বলেন, ‘‘ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য চিকিৎসক হিসেবে আপাতত কাউকে পাঠানো যাচ্ছে না। তাছাড়া, দুই দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ভালই পরিষেবা দিচ্ছেন। তবে ওই এলাকার কাছাকাছি গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে। ফলে গ্রামবাসীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Islampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy