মাছ শিকার । নিজস্ব চিত্র
জলভাসি জীবনে বুঝি দূরত্ব না মানলেও চলে!
সেখানে না আছে লকডাউনের অনুশাসন, না আছে কোয়রান্টিনের চোখ রাঙানি, পদ্মার রুপোলি জলে জেলেদের মাছের খোঁজে দিবারাত্র ভেসে থাকা দেখলে তেমনই মালুম হচ্ছে। অকাল লকডাউনে পদ্মা পাড়ের মৎস্যজীবীদের জীবনে প্রথম দিন কয়েক স্তব্ধতা নজরে পড়লেও জল তাঁদের যেন ফের টেনে নিয়ে গেছে মাঝ নদীতে। দিন আনি দিন খাই জীবনে তাই ফের ভেসে পড়েছেন তাঁরা। কাকমারি থেকে জলঙ্গি, চর থেকে চরে জলের দোলায় ভেসে বেড়াচ্ছে একের পর এক মেছো নৌকা।
তবে নদী মাছ দিলেও সে মাছ বাজারে নিয়ে যাওয়া বড় সমস্যা। ক্রেতা না থাকায় স্বল্প দামেই পদ্মার রুপোলি শস্য বিক্রি করে ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, ‘‘নুন আনতে আমাদের পান্তা ফুরোয় বাবু, এটুকু না করলে যে শুকিয়ে মরব!’’
দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের জেলা সম্পাদক বিদ্বানকুমার দাস বলছেন, ‘‘কাকমারি এলাকার মৎস্যজীবীরা পদ্মায় নামতে পারছেন। কিছু দিন আগে ওদের জীবনের উপর দিয়ে বড় ঝড় বয়ে গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ, দুই সীমান্ত প্রহরীদের মতানৈক্যে তাঁদের রুজিই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’’ দিনভর পদ্মায় ভেসে দিনান্তে চালডাল কেনেন কাকমারি ও আশপাশের ধীবরেরা। দিনভর মাছ ধরে বিকিকিনি সেরে দু’মুঠো চাল নিয়ে ঘরে ফেরা। ইলিশের মরসুমে বাড়তি আয় হলে তা মহাজনের দেনা মেটায়। কিন্তু মাসকয়েক আগে পদ্মার জলসীমায় মাছধরাকে ঘিরে উত্তাল হয় পদ্মা। তৈরি হয় সীমান্তে উত্তেজনা, ইলিশের ভরা মরসুমে সে সময় বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকে মাছ ধরার কাজ। সীমান্তের শিরচর এলাকার মৎস্যজীবী অমৃত মণ্ডল বলছেন, ‘‘লকডাউন শব্দটা আমাদের কাছে নতুন হলেও আক্ষরিক অর্থে লকডাউন কাকে বলে তার স্বাদ আমরা সে সময় পেয়েছি। ফলে এখন এই ভরা লকডাউনে আমরা আর নিজেদের ঘরে বন্ধ রাখতে পারিনি। করোনার প্রাণের ঝুঁকি হয়তো আছে, কিন্তু মাছ না ধরলে না খেয়ে মরব তো!’’
এখন পদ্মায় ইলিশের সময় নয়। চিংড়ি-পিউলি-ট্যাংরা-পাবদা মৎস্যজীবীদের জালে উঠে আসছে। ফলে লকডাউনের বাজারে চাল ডাল কেনার মতো টাকাটা হয়ে যাচ্ছে মাছ বিক্রি করেই। কিন্তু আগের মতো সেই দাম মৎস্যজীবীরা পাচ্ছেন না। সীমান্তের লালকুপ গ্রামের মৎস্যজীবী মহিদুল ইসলাম বলছেন, ‘‘অন্য বছরের তুলনায় এ বার একটু বেশি মাছ জালে উঠছে, কিন্তু বাজারে গিয়ে ঠিকঠাক দাম পাচ্ছি না। ৭০০ টাকার মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি করে আসতে হচ্ছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy