প্রতীকী ছবি
এলাকার আরও কয়েক জনের সঙ্গে পঞ্জাবের ফতেগড়ে লোহা তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন হরিহরপাড়ার বোরাকুলির সাবিরুল শেখ। কিন্তু লকডাউনের জেরে সেখানে তাঁরা ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। দিন দশেক আগে পকেটের টাকা শেষ হয়েছে। ফলে সেখানে পরিচিত এক মুদি দোকান থেকে ধার করে চাল ডাল কিনে দু'বেলা খাওয়ার সংস্থান করছেন তাঁরা। সাবিরুলের দাবি, ‘‘আমরা মুর্শিদাবাদের প্রায় ৬০ জন শ্রমিক এখানে আটকে রয়েছি। টাকা শেষ, স্থানীয় না হওয়ার কারণে সরকারি সাহায্যও মিলছে না। তাই পরিচিত এক মুদি দোকানির কাছ থেকে ধার করে জিনিসপত্র কিনে কোনও রকমে দু'বেলা চাল ফুটিয়ে খাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লকডাউনের মেয়াদ বেড়ে গিয়েছে। মুদি আর ক’দিন ধার দিতে পারবেন বুঝতে পারছি না।’’ পঞ্জাবের লুধিয়ানাতে লোহা তৈরির কারখানায় কাজ করেন হরিহরপাড়ারই রুকুনপুরের সামসুল শেখ, আলমগির শেখরা। সামসুল বলেন, ‘‘আমরা মুর্শিদাবাদের শতাধিক শ্রমিক আটকে আছি। পকেটের টাকা শেষ। তাই অন্যের দেওয়া খাবারে কখনও একবেলা, কখনওবা দু'বেলা চলছে।’’
তাঁর আবেদন, ‘‘আমাদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক।’’ সাবিরুল, সামসুলদের মতো মুর্শিদাবাদের হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়েছেন।
জেলা শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানান, ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকদের এ রাজ্যে ফেরানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ভিন্ রাজ্যে গিয়ে যাঁরা সমস্যায় রয়েছেন তাঁদের সাহায্য করার জন্য সেই রাজ্য প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। জেলা থেকে নবান্নের মাধ্যমে সেখানকার প্রশাসনকে সে সব জানানো হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘আমাদের জেলার যে সব লোক অন্য রাজ্যে সমস্যায় রয়েছেন, তাঁদের সাহায্য করা হচ্ছে। রাজ্যের মাধ্যমে আটকে থাকা রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘বর্তমানে ভিন্ রাজ্য থেকে এ রাজ্যে ফেরানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে কেউ সমস্যা থাকলে সেখানকার প্রশাসনের নজরে আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ভিন্ রাজ্যে গিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছে এমন কিছু লোককে আমি আর্থিক সহায়তাও করেছি।’’ তাঁর দাবি, "মুর্শিদাবাদ সহ এ রাজ্যের যে সব শ্রমিকরা কাজে গিয়ে ভিন রাজ্যে আটকে পড়েছেন তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ বহরমপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘‘এখনও হাজার হাজার শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে আটকে রয়েছেন।’’
বেলডাঙার কাপাসডাঙার তারিকুল ইসলাম মুম্বইয়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মেশিন বসানোর কাজে গিয়েছেন। তারিকুল বলেন, ‘‘কোনও রকমে বেঁচে আছি। গ্রামে স্ত্রী, দুই শিশু ও মা রয়েছে। মহামারির সময় তাঁদে পাশে থাকা দরকার। অথচ আমি এখানে ঘরবন্দি হয়ে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy