Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

অঘোষিত ‘রেড জোন’, ভয়ে ভূশণ্ডি

এলাকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর মুর্শিদাবাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন করতে বাঁশের ব্যারিকেড করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সালার শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৩:০৯
Share: Save:

ভূশণ্ডির গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর মেলার পরেই বেমালুম বদলে গিয়েছে এলাকার চিত্র। স্কুলে মিডডে মিলের চাল নেওয়ার ভিড় নেই, ব্যাঙ্কের সামনে নেই লম্বা লাইন। নেই খোলা বাজারের সকাল থেকে থিকথিকে ভিড়।

এমনকি, বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে অবাধ ঘোরাফেরাও বন্ধ করে দিয়েছেন। যা দেখে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা গেল, “এত দিনে লকডাউনের আসল চেহারা ফিরল!’’ সোমবার সালার থানার ভূশণ্ডি থেকে খাঁড়েরা, আলেপুর গ্রামেও একই ছবি।

লকডাউনের মধ্যেই জনধন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পাঁচশো টাকা তোলা কিংবা গ্যাসের ভর্তুকির টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছিল। এদিন তা প্রায় গ্রাহক শূন্য। খাঁড়েরা বাসিন্দা মুদি ব্যবসায়ী সমীর মণ্ডল বলেন, “এত দিন দোকান খুলে রাখতে কোনও ভয় ছিল না। কিন্তু পাশের গ্রামে ওই বৃদ্ধের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার পর দোকান খুলে বেচাকেনা করতেও ভয় লাগছে। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ মুদি দোকান খোলা রাখতে হবে। এখন উভয় সঙ্কটে পড়েছি।’’ একই ভাবে আলেপুরের হাটে ওই দিন যেমন আনাজপাতির ব্যবসায়ী অনেক কম ছিল, ঠিক একই ভাবে ক্রেতার সংখ্যাও ছিল অনেক কম। ওই আলেপুরের হাটে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার আগড়ডাঙা গ্রামের বাসিন্দারাও কেনাকাটি করেন।

এলাকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর মুর্শিদাবাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন করতে বাঁশের ব্যারিকেড করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। ওই দিন আনাজপাতি কেনার জন্য যাতায়াত করতে বাঁশের ব্যারিকেডের কিছুটা অংশ খোলা হলেও ওই গ্রাম থেকেও আলেপুরের হাটে আনাজ কিনতে আসেনি কেউ বলেও দাবি বাসিন্দাদের। একই ভাবে স্কুলের পড়ুয়াদের মিডডে মিলের চাল ও আলু দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিন ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রচার করেছেন স্কুলে চাল ও আলু নেওয়ার জন্য শুধু পড়ুয়াদের অভিভাবকরা যাবেন। এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে যাবেন। সেই মতো ওই দিন সকাল থেকে স্কুলের দু’-তিন জন গিয়ে চাল ও আলু সংগ্রহ করেছেন বলেও জানান খাঁড়েরা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে, ভিড় ছিল না একেবারেই। একই সঙ্গে ভূশণ্ডি গ্রামের একশো জন পড়ুয়া ওই স্কুলে পড়াশোনা করে। ওই সমস্ত পড়ুয়াদের বাড়িতে স্কুলের পক্ষ থেকেই চাল ও আলু পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ কবীর বলেন, “প্রথম দিন চাল ও আলু দেওয়ার সময় ভিড় করে এসেছিলেন অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। কিন্তু এ দিন তেমন ভিড় কই! সবাই কেমন জড়োসড়ো হয়ে রয়েছে যেন।

এ দিন সকাল থেকে ভরতপুর ২ ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্য দফতর ও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভূশণ্ডি গ্রাম ছাড়াও খাঁড়েরা ও আলেপুর গ্রামকে ‘রেড জ়োন’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। এবং মাইক নিয়ে ওই তিনটি গ্রামে প্রচারও করা হয়েছে। সালু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুস্তাক আলি বলেন, “এলাকাকে রেড জোন করা হয়েছে মানে বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য দফতর, ব্লক প্রশাসন, পুলিশ সব সময় এলাকার বাসিন্দাদের পাশে আছে। লকডাউন সম্পূর্ণ ভাবে মেনে চলতে হবে।” তবে, সরকারি ভাবে ওই এলাকাকে ‘রেড জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করার কোনও খবর মেলেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Ketugram Salar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy