Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

আতঙ্ক সত্ত্বেও স্বাভাবিক জমায়েত জুম্মার নমাজে

করোনা-সংক্রমণের আবহে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মনিরুল শেখ
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ০৬:৩৭
Share: Save:

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জমায়েত বন্ধ তথা একে অন্যের সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু শুক্রবার জেলার বিভিন্ন মসজিদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নমাজ পড়েছেন। এ দিনের জুম্মার নমাজে বেশির ভাগ মসজিদেই অন্য শুক্রবারের তুলনায় কম লোক ছিল। তবে দু’-একটি মসজিদে জনসংখ্যার তেমন ভাবে ফারাক দেখা যায়নি।

করোনা-সংক্রমণের আবহে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই শুক্রবার ফুরফুরা শরিফ এবং নাখোদা মসজিদের পক্ষ থেকে ভিড় না জমানোর আবেদন এসেছে। এ দিন অনিদিষ্ট কালের জন্য রাজ্য জুড়ে যাবতীয় ধর্মীয় জলসা বন্ধের আহ্বান জানান ফুরফুরা শরিফের মুখ্য নির্দেশক ত্বহা সিদ্দিকী। অন্য দিকে, নাখোদা মসজিদের ট্রাস্টি নাসের ইব্রাহিম বলেন, ‘‘বাড়িতেই নমাজ পড়ার আবেদন জানাচ্ছি আমরা। মসজিদে এলে আমাদের বিধিনিষেধ মানতে বলা হচ্ছে।’’ অথচ, শুক্রবার নাকাশিপাড়ার চ্যাঙ্গার জুম্মা মসজিদে অন্য শুক্রবারের মতোই কয়েকশো লোক নমাজ পড়েছেন।

ওই মসজিদে এ দিন নমাজ পড়তে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আকিব জাভেদ। তিনি বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে বেশি মাতামাতি হচ্ছে। রাস্তাঘাটেও লোকজন ঘুরছে। ফলে এ দিন লোকজন একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক ভাবেই নমাজ পড়েছেন।’’

কিন্তু প্রশাসন থেকে তো বারবার পরস্পরের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার কথা বলা হচ্ছে? আকিবের উত্তর, ‘‘সেটা তো কেউ মানছেন না। সবচেয়ে বড় কথা, জুম্মার নমাজ ঘরে বসে পড়া যায় না। তাই সাপ্তাহিক নমাজ পড়তে লোকজনকে মসজিদেই যেতে হয়েছিল।’’

তবে জেলার মধ্যে অন্যতম সংখ্যালঘু প্রধান ব্লক চাপড়ার পরিস্থিতি এ দিন খানিকটা আলাদা ছিল। চাপড়ার বাঙালঝির বাসিন্দা কামরুল বিশ্বাস ওরফে বাপি জানাচ্ছেন, এলাকার লোকজনের মধ্যে করোনা নিয়ে ভালই আতঙ্ক রয়েছে। চাপড়ার বহু মানুষ মধ্যপ্রাচ্য ও ভিন্‌রাজ্যে থাকেন। তাঁদের অনেকেই এখন বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের প্রায় সকলেই ঘরবন্দি রয়েছেন। এ দিন মসজিদ থেকেও আবেদন করা হয়েছে বিদেশ ফেরতদের চিহ্নিত করে আপাতত ঘরবন্দি করতে হবে। এই রকম পরিস্থিতিতে শুক্রবারের জুম্মার নমাজে লোকসংখ্যা ছিল বেশ কম।

চাপড়ার বহু দিনের মসজিদ বাঙালঝির জামে মসজিদেও এ দিন তুলনায় লোক কম ছিল। ওই মসজিদের ইমাম মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘সরকার বলেছে ভিড় করা যাবে না। কিন্তু বিশেষ এই নমাজ মসজিদে এসেই পড়তে হয়। যাঁদের বাইরে থেকে ফেরার কোনও রেকর্ড নেই বা বাইরে থেকে ফেরা কোনও মানুষের সংস্পর্শে আসেননি— এমন মানুষই এ দিন মসজিদে এসেছিলেন।’’ এ দিন মসজিদ থেকে বলা হয়, বাইরে থেকে আসা লোকজনের ব্যাপারে খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে তা প্রশাসনকে জানাতে হবে। জেলার একাধিক মসজিদের ইমামেরা জানাচ্ছেন, করোনা নিয়ে তাঁরা মসজিদেও লোকজনকে সচেতন করছেন। আর যাঁরা ঝুঁকিমুক্ত, শুধুমাত্র তাঁরাই নমাজে যোগ দিচ্ছেন। যদিও চিকিৎসকদের মত, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে এই মুহূর্তে জমায়েত না করাই ভাল।

কল্যাণীর এক বাসিন্দা সিকেন্দার মাহাতোর মতে, ‘‘সংবিধানে ২৫ থেকে ২৮ ধারার মধ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার কিন্তু নিরঙ্কুশ নয়। জনস্বাস্থ্য ও জনগণের নৈতিকতা বিচার করে তা রাষ্ট্র সঙ্কোচন করতেই পারে। এটা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।’’ তাঁর মতে, হিন্দু-মুসলিম বা যে কোনও ধর্মের মানুষেরই এই অবস্থায় ভিড় করা উচিত নয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Jama Masjid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy