সমবায়ের বাইরে বিক্ষোভ। ধানতলায় সোমবার। নিজস্ব চিত্র sudevdas123@gmail.com
সমবায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের পরিবারই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছে ১৭ লক্ষ টাকা। অথচ গ্রাহকেরা তাঁদের গচ্ছিত টাকা তুলতে গেলে দিনের পর দিন ঘোরানো হচ্ছে।
এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার ধানতলা থানার হেমায়েতপুর হাজরাপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েক হাজার গ্রাহক। ব্যাঙ্ক থেকে অভিযুক্ত ম্যানেজার নরেশ বিশ্বাসকে বাইরে বার করে আনারও চেষ্টা করেন মহিলারা। পরে ধানতলা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু'বছর ধরে ওই ব্যাঙ্কে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। কাগজে-কলমে আর্থিক গরমিল সাড়ে পাঁচ কোটি টাকারও বেশি। বর্তমানে সাড়ে তিন হাজার গ্রাহক রয়েছেন ব্যাঙ্কে। শতাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টও রয়েছে। ২০১৯ সালে ব্যাঙ্ক পরিচালনার জন্য নয় সদস্যের একটি কমিটি তৈরি হয়। ওই কমিটি থাকাকালীন আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ দিন প্ল্যাকার্ড হাতে এলাকার মহিলা ও প্রবীণ বাসিন্দারা টাকা ফেরতের দাবিতে ব্যাঙ্কের বাইরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন। রানাঘাট উত্তর-পূর্বের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সমীরকুমার পোদ্দার এসে কয়েক জন গ্রাহককে নিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু গ্রাহকেরা কবে টাকা ফেরত পাবেন, তার সদুত্তর দিতে পারেননি ম্যানেজার।
গ্রাহকদের বড় অংশের অভিযোগ, কাগজে-কলমে ব্যাঙ্ককর্মী দেখিয়ে অসদুপায়ে অনেককে ঋণ দিয়েছেন ম্যানেজার। নিজের পরিবারের সদস্যদেরও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ঋণ দিয়েছেন তিনি। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রভাবশালীদের কম সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মৌসুমী রায় বলেন, "পুরনো পাসবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন পাসবই নিতে এসে জানতে পারি, আমার অ্যাকাউন্টে টাকাই নেই!” তাঁর মতো অনেকেই ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা তুলতে পারছেন না। মাস কয়েক আগে নদিয়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের তরফে এই সমবায় ব্যাঙ্কের আর্থিক গরমিলের বিষয়ে একটি তদন্ত হয়েছিল। তাতে ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার হিসেব মেলেনি।
প্রাক্তন বিধায়ক সমীর পোদ্দারের দাবি, "প্রায় ছ'কোটি টাকার গরমিল সামনে এলেও আসল তছরুপের পরিমাণ ১২ কোটি টাকারও বেশি। এ ছাড়া সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ২০ লক্ষ টাকারও বেশি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।" ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নরেশ বিশ্বাস বলেন, "ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ মে পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব গ্রাহকদের টাকা ফেরানোর চেষ্টা করছি।" জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান শিবনাথ চৌধুরী বলেন, "১০ মে-র পর টাকা ফেরত না দিলে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর হবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy