Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

আশ্রয় ত্রিপলের নীচে, টাকার অভাবে থমকে নির্মাণ

গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কান্দি পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ১৪৭৪টি পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে। এক একটি ঘর নির্মাণে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা। কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে চলছে ওই প্রকল্প। এর জন্য সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা।

ছাদ-কই: ধুলি য়ানে। —নিজস্ব চিত্র।

ছাদ-কই: ধুলি য়ানে। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক সাহা ও বিমান হাজরা
কান্দি ও ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০২:৩৩
Share: Save:

সবার মাথার উপর থাকবে পাকা ছাদ। এক কামরার ঘর পাবে সবাই। বছর দুয়েক আগে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। সেই মতো বস্তি এলাকায় বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় বেশ কয়েক হাজার টাকা পেয়েছেন উপভোক্তারা। তারপর থেকেই শুরু হয়রানি। মাস পাঁচেক ধরে অমিল দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। এ দিকে ঘর দ্রুত তৈরির আশায় উঠোনেই ত্রিপল টাঙিয়ে বাস করছেন উপভোক্তারা। অথচ অর্থ-সঙ্কটে পাকা ঘর নির্মীয়মাণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এমনই অবস্থা ধুলিয়ান ও কান্দি পুরসভার।

গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কান্দি পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ১৪৭৪টি পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে। এক একটি ঘর নির্মাণে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা। কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে চলছে ওই প্রকল্প। এর জন্য সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। ওই অর্থে ৩৪৫ বর্গ ফুটের এক কামরার একটি পাকা বাড়ি তৈরি করা হবে। বাড়ি তৈরির শুরুতেই পুরসভা উপভোক্তাকে ৯০ হাজার টাকা দিয়েছে। ওই টাকায় দেওয়াল গাঁথার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু দরজা-জানালা ও ছাদ তৈরির জন্য আর টাকা মিলছে না। উপভোক্তারা মাস দু’য়েক ধরে পুরসভাকে বিষয়টি একাধিক বার জানিয়েছেন। কিন্তু বার বার উত্তর এসেছে, ‘‘ধৈর্য্য ধরুন। ঠিক টাকা আসবে।’’

কুঁড়েঘরের জায়গায় পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন পড়শিদের বাড়িতে। কেউ আবার নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশেই ত্রিপল টাঙিয়ে থাকছেন। কালবৈশাখীর ঝড়ে অনেকের ওই ত্রিপল উড়ে যাচ্ছে। নিরঞ্জন বাগদি বলছেন, ‘‘পাঁচ মাস আগে কিছু টাকা পেয়েছিলাম। তারপর আর কোনও টাকাই পেলাম না। তাড়াতাড়ি ঘর হবে যাবে—এই ভেবে ত্রিপল টাঙিয়ে থাকছি। রোদ-ঝড়ে এ ভাবে আর থাকতে পারছি না।’’ ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান সান্ত্বনা রায় অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, ‘‘দ্রুত দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হবে।’’

একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ধুলিয়ানে ৬৯৫টি ঘর তৈরি হচ্ছে। উপভোক্তারা প্রাথমিক পর্যায়ে ৭৭ হাজার টাকা পেয়েছেন। শুরু হয়েছে বাড়ি তৈরি। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলছে না। ফলে মাঝপথে ভেঙে যেতে বসেছে পাকা বাড়িতে মাথা গোঁজার স্বপ্ন। খরবোনা পল্লির নাজবুল্লা মহলদারও নির্মীয়মাণ বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছেন। ঝড়বৃষ্টিতে মাঝেমধ্যেই উড়ে যাচ্ছে সেই পাতলা ত্রিপল। পুরপ্রধান সুবল সাহা ভরসা দিচ্ছেন, ‘‘এ সপ্তাহের মধ্যে উপভোক্তাদের অন্তত ৩৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE